আধুনিকা প্রেমিকার চোখে চোখ রেখে রাবীন্দ্রিক কোনো প্রেমিক যদি এইরূপ প্রেম নিবেদন করে :

“প্রহরশেষের আলোয় রাঙা সেদিন চৈত্রমাস –

তোমার চোখে দেখেছিলাম আমার সর্বনাশ।”

তবে ক’জন প্রেমিকা যে এর মর্মোদ্ধার করতে পারবে বলা মুশকিল। চৈত্র মাস বসন্ত কাল, বৈশাখে গ্রীষ্মকাল, বিদ্যালয়ে পড়ানো হয় বটে, কিন্তু এখন আর চৈত্রের প্রত্যয়ও মনে জাগে না আর কালবৈশাখীর রোমাঞ্চও অনুভূত হয় না।  সত্যি বলতে কি, পুজো পার্বণ ব্যতীত বাংলার সন তারিখ আমাদের দৈনন্দিন জীবনে আর কোনো প্রভাব ফেলে না। ব্যতিক্রম শুধু বর্ষবরণের দিনটি। বঙ্গাব্দের এই প্রথম দিনটি আমরা যথাসাধ্য বাঙালিয়ানা দিয়েই পালন করি। বর্ষবরণের এই দিনটি উদযাপন বাঙালির কাছে তাৎপর্যমণ্ডিত বিশেষত দুটি কারণে। এক, এটি সম্পূর্ণ ধর্মনিরপেক্ষ একটি উৎসব; দুই, এই দিনটিতে জড়িয়ে আছে বাঙালির ব্যবসা। ব্যবসায়ী সম্প্রদায় এই বিশেষ দিনটি থেকেই গণেশ পুজো করে কালী-মায়ের থানে হিসেবের খাতা স্পর্শ করিয়ে বছরের ব্যবসার শুভারম্ভ করে। ব্যবসার মধ্যে বাঙালির কাছে এককালে বই ব্যবসা বিশেষ স্থান অধিকার করে থাকত। তাই পয়লা বৈশাখের দিনে বইকে কেন্দ্র করে বইপাড়ায় প্রকাশকের ঘর লেখক-পাঠকের সমাগমে এবং আড্ডায় থাকত মুখর হয়ে। এখনও থাকে।

বাংলার জল-হাওয়ার সঙ্গে আড্ডার একটি আত্মিক যোগ আছে। অতীতে বাংলার বুকে বিখ্যাত আড্ডাগুলির কোন দলিল প্রকৃতপক্ষে নেই। বাঙালির আড্ডার ইতিহাস কখনো লেখা হয়নি, লেখা হবে কিনা তাও জানিনা তবে যদি হত তাহলে বাঙালি জাতির মনের আসল চেহারার অনেক নিবিড় খবর পাওয়া যেত। বইপাড়ার কিছু নববর্ষের আড্ডা ফিরে দেখা যাক; যেই আড্ডায় সামিল হতেন সেই সময়কার বহু জ্ঞানীগুণী ও বিশিষ্ট ব্যক্তি।

‘মানসী’ পত্রিকার অফিস। দরজার উপরে পুরনো একটি সাইনবোর্ড ঝুলছে, অন্য দিন ভেতর থেকে ছাপাখানার শব্দ আসে, বাইরে রাস্তার ধারে প্রেসের কালি মাখা এক ঝুড়িতে পরিত্যক্ত ছেঁড়া ময়লা প্রুফের কাগজ, কিন্ত বৈশাখের প্রথম দিনটিতে পুরনো বাড়ির ভেতরেই বসেছে সেই সময়কার বাংলার সেরা আড্ডা। আড্ডাধারী স্বয়ং নাটোরের মহারাজা জগদীন্দ্রনাথ রায় এবং দুই মৌতাত জোগানদার প্রভাত কুমার মুখোপাধ্যায় এবং রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়। ঐতিহাসিক গবেষকের গাম্ভীর্যের আড়ালে কি প্রবলরকম রসবোধ ছিল তাঁকে না দেখলে বোঝা যেত না । একান্ত স্বল্পভাষী ছিলেন কিন্তু এখানে তার সব বাঁধন খুলে যেত, তার মধুর বাচনভঙ্গি শুনলে বোঝা যেত যে কথা বলাও একখানা আর্ট। এই আড্ডার সঙ্গে খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থার প্রাচুর্য ছিল দেখার মতো। পয়লা বৈশাখের দিন মুখর হয়ে থাকত ‘মানসী’ পত্রিকার অফিস।

Deb Sahitya Kutir Publishers Bengali New Year celebration
দেব সাহিত্য কুটীর প্রকাশনার এক নববর্ষের আড্ডায় সুবোধ সরকার ও ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায়

কলেজ স্কোয়ার। পেছনদিকে ছিল “বুক কম্পানি”। মস্ত বড় বইয়ের দোকান। সেই সময় এই বুক কোম্পানি ছিল বইপাগল মানুষের বৈঠকখানা। কারণ ইউরোপ এবং আমেরিকা থেকে নতুন নতুন বিজ্ঞান ও সাহিত্যের বই প্রথমে এরাই আনা শুরু করেন এবং স্বভাবতই এদের মাধ্যমে তখনকার তরুণ সমাজ ও বুদ্ধিজীবীরা বিশ্বসাহিত্য এবং বিশ্বচিন্তার সঙ্গে পরিচিত হবার সুযোগ পেতেন। বলাবাহুল্য এই বুক কোম্পানিতে বসত পয়লা বৈশাখের বিরাট আড্ডা। সামনে পালিশ করা ঝকঝকে কাঠের বিরাট কাউন্টার, তার পেছনে বিরাট বিরাট বইয়ের আলমারি অলিগলি, তার পেছনে গুদামঘর, চারিদিকে সদ্য জাহাজ থেকে নামানো বইপত্রের কাঠের বাক্স মেঝেতে ছড়ানো, স্তূপাকার বই, বই এর বিচিত্র গন্ধ, তারই মাঝে নিখুঁত বাঙালি পোশাক পরিহিত দুই আঙুলের মাঝে সোনা বাঁধানো সিগারেটের পাইপ মুখে বসে প্রমথ চৌধুরী, আনন্দবাজার পত্রিকার সুরেশচন্দ্র মজুমদার, ধূর্জটিপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় এবং পাঠককূল। কলকাতা শহরে যারা নিয়মিত পড়াশোনা করতেন বৈশাখের প্রথম দিনটিতে এখানে তাদের দেখা পাওয়া যেত। বইয়ের নেশা যাদের তাদের সকলকেই বর্ষবরণের এই আড্ডায় স্বাগত জানানো হত। কোম্পানির মালিক নাদু বাবু খবর রাখতেন কে কোন জাতীয় বই খুঁজছেন। পয়লা বৈশাখের দিনে বিলিতি ক্যাটালগ ঘেঁটে ঘেঁটে সেইসব বইয়ের পাত্তা বের করে সাজিয়ে রাখতেন । বই দেখা, বই কেনাবেচার সঙ্গে থাকত কেটলি কেটলি চা, কচুরি সিঙ্গাড়া এবং বিভিন্ন প্রকারের মিষ্টি।

আরেকটি বিখ্যাত বইয়ের দোকান এম সি সরকার। মালিক সহজসরল, অমায়িক সুধীন্দ্রনাথ সরকারের সঙ্গে উপস্থিত থাকতেন সাহিত্যিক ও শিল্পী বন্ধুরা। তাঁরা অনেকেই ‘ভারতী’ পত্রিকার মূল আড্ডার লোক। পয়লা বৈশাখের আড্ডায় যেতেন ‘প্রবাসী’র সম্পাদক কেদার চট্টোপাধ্যায়, বিখ্যাত চিত্রপরিচালক নীতিন বোসের দাদা হীতেন বোস প্রমূখ। এক জাতীয় রসিক আছেন যারা লেখেন না, বক্তৃতা দেন না, অধ্যাপনা করেন না, শুধু জমাট আড্ডা দেন। হিতেন বোস হলেন সেই কুলীন আড্ডাবাজ। 

ঝামাপুকুর লেনের দেব সাহিত্য কুটীরে মহাসমারোহে উদযাপিত হত পয়লা বৈশাখের অনুষ্ঠান। সিরিয়াস আলোচনার পাশাপাশি চলত রঙ্গরসিকতা। বহু উৎকৃষ্ট সাহিত্যের বীজ বপন হত মননশীল এই আড্ডা থেকেই। 

একটু ভিন্ন পরিবেশে পয়লা বৈশাখের আরেকটি জমাটি আসর বসতো শিশিরকুমার ভাদুড়ীকে কেন্দ্র করে। শিশিরকুমারের নাট্য মন্দিরে। এই আসরের আকর্ষণে শরৎচন্দ্র বর্ষবরণের দিনটিতে পানিত্রাসের নির্জনবাস ফেলে ছুটে আসতেন নাট্য মন্দিরে। এখানে অকৃতী কেউই ছিলেন না। ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট থেকে বিচারক, পুলিশের বড় কর্তা থেকে বড় ডাক্তার এই আসরে দুদণ্ড অবগাহন করে যেন সারা বছরের বেঁচে থাকার রসদ সংগ্রহ করে নিতেন। শিশিরবাবু সকলের কাছে সুধাদা বলে পরিচিত ছিলেন। বৈশাখের প্রথম দিনটিতে সুধাদার কন্ঠে আবৃত্তি এক অন্য মাত্রায় পরিবেশিত হত, যারা শুনেছেন তারা বলতেন তাঁর কণ্ঠে রবীন্দ্রনাথ না শুনলে রবীন্দ্রনাথকে বোঝা অসম্পূর্ণ রয়ে যায়।

Shisendu Mukherjee
নববর্ষের আড্ডায় শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়

বর্ষবরণের আরো দুটি আড্ডা কথা উল্লেখ করতেই হয়, ‘কল্লোল’ এবং ‘শনিবারের চিঠি’। এই দুই আড্ডার রেষারেষি এমন তীব্র হয়ে উঠত যে দুই দলকে ডেকে রবীন্দ্রনাথ জোড়াসাঁকোর বাড়িতে সাহিত্যের প্রথম সামিট মিটিং এর ব্যবস্থা করেছিলেন । পয়লা বৈশাখের এই দুই আড্ডার নিভৃত অন্তরালে আছে রবীন্দ্র পরবর্তী বাংলা সাহিত্যিকদের সংগ্রামী জীবনের বহু হাসি-কান্নার অলিখিত ইতিহাস, আলোয় এসেছেন বহু বিখ্যাত লেখক। শনিবারের চিঠির প্রাণপুরুষ সজনীকান্ত দাস ছিলেন অত্যন্ত রাশভারী মানুষ। শোনা যায় বৈশাখের এই প্রথম দিনটিতে কেউ যদি নিধুবাবুর টপ্পা বা রবি ঠাকুরের গানের মধ্যে নিজের সুর বা কথা ভুলবশত ঢুকিয়েও ফেলতেন সজনীকান্ত দাস নাকি তাকে ক্ষমা করে দিতেন । এমনই ছিল বিশেষ দিনটিতে আড্ডার ঔদার্য!

আরও পড়ুন: নববর্ষে কবজি ডুবিয়ে বাঙালি খানা

পটুয়াটোলা লেনের গলিতে রাস্তার ওপর একটি ছোট্ট দোতলা বাড়ি। রাস্তা থেকে তিনটি ধাপ সিঁড়ি উপরে উঠলে একফালি একটা ছোট্ট রক। সামনে একটা ছোট্ট ঘর সেই ঘরে ‘কল্লোল’ এর জন্ম। সেই ঘরেই নববর্ষের আড্ডা বসত। উল্লেখ্য ঘরটিতে পেছনের দিকের একটি দরজা আছে। ঘরে একটি টেবিল। টেবিলের সামনে চেয়ার, সেটা হল সম্পাদকের চেয়ার। এছাড়া আছে একটা ছোট্ট তক্তাপোশ আর একটি ছোট্ট ডেক-চেয়ার। এই ডেক-চেয়ারটির কী যে গুণ ছিল, সব আড্ডাধারী-ই এই চেয়ারটিতে বসতে চাইতেন। তাই বাইরে থেকে যিনি আসছেন রাস্তা থেকে দেখে নিতেন এই ইজি চেয়ারে কেউ বসে আছে কিনা। যদি দেখতেন চেয়ার দখল, ধরুন পবিত্র গাঙ্গুলী আগে থাকতে বসে আছেন, অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত সামনের দরজা দিয়ে না ঢুকে গম্ভীরভাবে পেছনের দরজা দিয়ে ঢুকে বলতেন, “এই শৈলজা বাইরে তোকে একবার ডাকছে”। পবিত্র বাইরে শৈলজার সঙ্গে দেখা করবার জন্য ইজিচেয়ার ছেড়ে উঠে পড়তেন। বাইরে বেরিয়ে শৈলজাকে না দেখেই পবিত্র বুঝতেন ইজি চেয়ার দখল করে অচিন্ত‍্য বসে আছে, তখন পবিত্র নাক ফুলিয়ে রেগে চলে যেতেন আর ঘরে ঢুকবেন না। নাক ফুললে পবিত্র রাগ সামলাতে পারতেন না। কিন্তু মিনিট দশেক বাদে খানিকটা খৈনি জোগাড় করে ফেলে আবার ফিরে আসছেন নববর্ষের আসরে। ইজি চেয়ারে বসা অচিন্ত্যর দিকে চেয়ে বলতেন “কখন এলে?” যেন এই প্রথম দেখা। চেয়ার হারানোর দুঃখ সগৌরবে চাপা দিতে হত! মিনিট দুয়েক পরে হঠাৎ পেছনের দিকে দরজা অর্থাৎ বাড়ির ভিতরের দিকে দরজায় কড়া নাড়ার শব্দ হতো । পবিত্র উঠে গিয়ে দেখে অচিন্ত্য’র দিকে চেয়ে গম্ভীরভাবে বৌদি ডাকছেন। বৌদির ডাক ‘কল্লোল’ এর আড্ডাধারী কাছে irresistable, কারণ তিনি ছিলেন স্বয়ং অন্নপূর্ণা। অচিন্ত্য তরিঘড়ি ইজি চেয়ার ছেড়ে ভেতরে ঢোকেন আর পবিত্র সগৌরবে আবার ইজি চেয়ার দখল করেন। সেই দশ মিনিট পবিত্র বৌদির সঙ্গে পরামর্শ করে এসেছিলেন চেয়ার দখল করার কৌশল। বৈশাখের এই প্রথম দিনটিতে সারাদিন ধরে চলত এইভাবে চেয়ার দখল করার কৌশল এবং যুদ্ধ। এবং সঙ্গে থাকত অন্নপূর্ণা-সম বৌদির অতিথি অ্যাপায়নের সব রকমের উপাচার। নতুন বছরের পুণ্য তিথিতে জীবনের স্বপ্ন-লগ্নে সামান্য ইজিচেয়ার দখল করার আনন্দই ছিল নববর্ষের আসরের অদৃশ্য চুম্বকের আকর্ষণ।

বিগত যুগের বই পাড়ার বিভিন্ন আসরে যে কজন রসদ জোগানদারের নাম জানা যায় তাদের মধ্যে পাঁচজন অতুলনীয়। দাদাঠাকুর, প্রেমাঙ্কুর আতর্থী, নলিনীকান্ত সরকার, কাজী নজরুল ইসলাম এবং বিশ্বপতি চৌধুরী। নববর্ষে যখন ওঁরা তিনজন বা চারজন কি কখনো কদাচিৎ পাঁচজনই একই আড্ডায় এসে পড়তেন স্বর্গের একঘেয়েমি থেকে বাঁচবার জন্য, নন্দনকানন ছেড়েও দেবতারা বোধকরি এসে দাঁড়াতেন এদের কথাবার্তা শোনার জন্য। সে যুগের সাহিত্যিকদের আড্ডার বিশেষ রসদ জোগানদার ছিলেন ‘মহাস্থবির জাতক’ এর অমরস্রষ্টা প্রেমাঙ্কুর আতর্থী, যিনি বুড়োদা নামেই পরিচিত ছিলেন। বাঙালিদের মধ্যে এক জাতের কথা-বলিয়ে লোক ছিলেন, তাদের ছিল আলাপের সম্মোহনী শক্তি। বুড়োদা ছিলেন সেই জাতের মানুষ, যেখানে বসতেন আসর জমে যেত; সে নির্মলচন্দ্রের বাড়িই হোক বা শিশিরকুমারের ওখানে, তার গল্পের টানে বাজেশিবপুর থেকে শরৎচন্দ্র ছুটে আসতেন। গাড়ি না পেলে ট্রামে আসতেন। দাদাঠাকুরের অপূর্ব ব্যক্তিত্ব ও মধুর রসিকতা, নজরুল কড়িকাঠ ফাটানো প্রাণখোলা হাসি নববর্ষের আড্ডায় অন্যমাত্রা সংযোজন করত। নজরুল তখন ‘ধুমকেতু’ নামক পত্রিকা প্রকাশ করছেন। পাঁচকড়ির সঙ্গে লাগল নজরুলের ঝগড়া। পাঁচকড়ি বন্দ্যোপাধ্যায় তখন ‘নায়ক’ এর স্বনামধন্য সম্পাদক। তাঁর সম্পাদকীয়তে পাঁচকড়ি নজরুলকে গালাগালি দিয়েছিলেন। নজরুলও ‘ধূমকেতু’তে তার জবাব দিয়েছিলেন। মুখোমুখি আসরে ইস্পাতের সঙ্গে ইস্পাতের সংঘর্ষে আগুনের ফুলকি ঝরে পড়তে লাগল। পাঁচকড়ি বন্দ্যোপাধ্যায় তখন পাকা লেখক, নজরুল নবাগত তরুণ। কিন্তু তরুণ নজরুলের ভাষার তরবারিতে পাঁচকড়ির কুড়ুল হাত থেকে পড়ে যাওয়ার অবস্থা হত। পাঁচকুড়ি স্বীকার করেছিলেন ‘মুসলমান’ ছেলেটি বাংলা ভাষা জানে।

Bengali New Year Celebration in College Street
দেব সাহিত্য কুটীর প্রকাশনার নববর্ষ উদযাপন

এইরকমই ছিল তখনকার বই পাড়ার বর্ষবরণ উৎসব। সঙ্গে থাকত নতুন বই পত্রিকা , বই বেচা কেনা, হাল খাতায় শুভলাভের হিসেব, নতুন ক্যালেন্ডার, ডাবের জল-সরবৎ-নোনতা-মিষ্টি -গানে-কবিতায় মাখামাখি একটি দিন। আর থাকত আড্ডার আসর । প্রত্যেকটি আড্ডার ছিল ভিন্ন স্বাদ, ভিন্ন গন্ধ, ভিন্ন আকর্ষণ ও আবেদন এবং যার যেরকম মনের চাহিদা সে সেই রকম আসর খুঁজে নিত। এ যেন অনেকটা অন্তরের সঙ্গী খুঁজে পাওয়ার মতন একটা মিস্টিক ব্যাপার , রোমান্টিসিজমে ভরপুর। সেই রোমান্টিসিজম আজও অব্যাহত। বইপাড়া আজও প্রকাশক-লেখক-পাঠকের আড্ডায় মুখর থাকে পয়লা বৈশাখের দিনটিতে। স্থান কাল একই । পরিবর্তন হয়েছে শুধু পাত্র। নতুন লেখক, নতুন পাঠক। বই পাড়াকে কেন্দ্র করে বর্ষবরণের দিনে বাঙালিয়ানার এই জয়যাত্রা এগিয়ে চলুক ।

ছবি সৌজন্য: রূপা মজুমদার

Rupa Majumdar Author

প্রকাশক, সমাজসেবক ও শিক্ষাবিদ। নানা ক্রিয়েটিভ কাজকর্মে জড়িয়ে থাকতে
ভালবাসেন, আর ভালবাসেন নিজস্ব লেখালিখি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *