মায়াকুচি ছড়িয়েছে আজ হাওয়া
জল পড়ে তাই স্মৃতির স্টলে দাগ,
আয়ুর সমান এপিটাফের খাতা
উল্টে যেতেই গড়াল অক্ষরে।
পংক্তিমালা ভাসছে সোনার জলে
এমন নাকি ট্রাফিক বরণ পথ,
মেলার কাছে আসতে দেরি হলে,
তোমায় নিয়ে সেলফি-র উৎপাত।
সন্ধ্যাবেলায় গিটার জাগে নীল
ঠোঁটের ফাঁকে জটিল হলেন খেলা,
ওই যুবতীর ডেনিম ছেঁড়া মন
এই যুবকের উড়াল দিল ডানা।
এমন মেলায় কুড়িয়ে পেলে তবে
পকেটমারি হওয়া কারুর নাম,
তবুও সে নাম অন্ধকারে মিশে
তোমায় বলছে, ককখনো আসব না!
চায়ের রংয়ে বিকেল গড়ায় রোজ
তমুক গেটে দেখা হওয়ার কথা,
একটি কাপে জন্মজোড়া ধোঁওয়া
অন্য কাপ তো কথাই বলছে না!
দীর্ঘ হল মেলা ফেরৎ ছায়া
ঘাসের মাঝে ক’দিন রাজবাড়ি,
প্রিয় কবির নতুন বইয়ের আঁচে
লালচে হলেন ঈষৎ অভিমানী।
পিঠে মৃত পিতার শীতল হাত
বন্ধুরা সব দূরের চত্বরে,
আবার উড়বে মলাট ছেঁড়া খুশি
আবার হাসবে বইয়ের ভরা ব্যাগ।
ভিড়ের মধ্যে সঙ্গোপন বাড়ে,
যদিও জানি খেলা ভাঙার মোড়,
কারও কানে লা দুলছে ভিটা
আমার মাঠে কাঁপন ধরছে সুর।
বিড়ম্বিত ট্যাটুর অগ্রভাগে
ক্লিভেজ-দীর্ঘ সনেটে সংশ্লেষে,
কোথায় একা মেরুন বাইলুমে
মলাট হয়ে আঁচল উড়ছে বেশ।
গিল্ড অফিসের সামনে দাঁড়িয়ে কে, সে?
আমি, নাকি আমার অংশভাগ,
বইশিকারির মিছিল চলে আগে
হারিয়ে যাওয়ার সলতে পুড়ে রাত।
আমরা জানি মেলা মানেই ধুলো
স্মৃতির ধুলো বড়ই মারাত্মক,
আমরা জানি বিরহ বিপ্লবে,
ঘোষক জানে অপেক্ষার হাত।
মেলান্তে সেই পান্ডুলিপির তীরে
জাহাজ শোনায় বিদায়ী সাইরেন,
রূপকথা সে ছেড়ে যাচ্ছে আর
ছেড়ে যাচ্ছে কাব্য লেখার হাত…
ছবি সৌজন্য: দেবাশীষ সাহা
সকালে কবিতা লেখেন আর সন্ধ্যায় সংবাদ । এই স্বআরোপিত দ্বিচারিতার মধ্যেই ফ্রিস্টাইল বেঁচে থাকা । পেশার সূত্রে দেড় দশক দিল্লিতে অতিক্রান্ত। ভ্রমণ যত্রতত্র, কাব্যগ্রন্থ আপাতত পাঁচটি। জন্ম ১৯৭০, কলকাতা।