দু’হাতে লুঙ্গিটা গোটাতে গোটাতে দোকানের সিঁড়িতে পা রাখতেই দিলিপ দে জিজ্ঞেস করে উঠলেন, ‘কি রে মোহর আজ এত তাড়াতাড়ি দোকানে এলি, খদ্দের নাই?’
–না এই যে আপনি আসবেন তার জন্যেই সব বন্ধ রেখেছি।
আগুনে ঘি পড়বার মতই দপ্ করে জ্বলে উঠলেন দিলিপ দে, ‘মুখ সামলে কথা বল, আমি যাব তোদের ঐ বেশ্যা ঘরে?’ তারপরে দোকানির দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘বাবু, এই সব লোককে দোকানে উঠতে দিবি না, তাহলে কিন্তু তোর দোকানে আর পা মাড়াব না।’
–সে আপনার মন দিলিপদা। কিন্তু আপনারই বা এত প্রশ্নের কি আছে ?
-বটে এখন আমার এত প্রশ্নের কি আছে। বেশ আমিও দেখব কীকরে এই মোড়ে তোর দোকান থাকে আর কীভাবে ঐ শালার কাড্ডু ঐ সব নোংরামো করে।
শেষের কথাগুলো বলেই দিলিপ দে একরকম ঝাঁপিয়ে দাশ কাকিমার বাড়ির দিকে পা বাড়াতেই দোকানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মোহর সেই দিকে একবার চোখ দুটো রেখে আস্তে নিজের মনেই বলে উঠল, ‘বাল ছিঁড়বি।’ তারপর দোকানি বাবুদাকে জিজ্ঞেস করল, ‘শালার পিরিত আবার আরম্ভ হয়ে গেছে?’
–হ্যাঁ হ্যাঁ, কদিন একটু বন্ধ ছিল, দাশের ছোট ছেলের বউ নাকি কী সব অপমান করেছিল। এই ব্যাটা দিলিপ বলেছিল, ‘তোমার ঘরে মুততেও আসব না।’ আবার এখন যেতে আরম্ভ করছে। শালা ঢ্যামনা লোকের কোনও মান সম্মান বোধ আছে নাকি, কুকুরের অধম, রুটিনও এক্কেবারে বাঁধা। সকালে ঐ সাহার বাড়ি, জলখাবার খেয়ে দাশের বাড়ি, আর সন্ধের দিকে দে বাবুর বিধবা বউটার ঘরে বসে থাকা।
– বউ কিছু বলে না ?
-বলে হয়ত, আমরা তো আর দেখতে যাই না। এই কয়েকদিন আগে স্ট্রোক হয়েছিল। ছেলেটাও তো বাইরে কাজ করে। শুনেছি বউটাকে বাইরে বেরোতেই দেয় না।
–আরে আমার সাথে দেখা হলেই জিজ্ঞেস করে, ‘নতুন মাল এল নাকি?’ আজ ঐ জন্যে দিলাম। তারপর জানো গেল মাসে কারা কোন অফিসারকে চিঠি করে এসেছিল। দাদা ফোন করে জানল, কয়েকজন নাকি এদের পার্টিকে বলে এই সব করিয়েছে। তার মধ্যে এই শালাও ছিল। কিন্তু তাতে দাদার কি ছেঁড়া গেল? বিরাট ঢ্যামনা লোক, তুমিও সাবধানে থাকবে।
-আমাকেও একবার বলেছে, ‘কাড্ডুর ওখানে যা দুটো মাল এসেছে, এক্কেবারে তরমুজ।’ আমি বলেও দিয়েছিলাম, ‘একবার ঘুরে আসুন।’ শুনে জিব বের করে বলে, ‘আমার এই ঠিক আছে।’
একটু আগেই এক পশলা বৃষ্টি হয়ে গেছে। বাইরে লোকজনও একটু কম। মোহর আলি অন্য দিনের থেকে তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠেছে। এমনিতে প্রতিদিন সকাল মানেই দশটার কম না। আর উঠবেই বা কী করে প্রতি রাতে শুতে শুতে খুব কম করে তিনটে হয়। এই কোয়ার্টারে যত কাজ সব তো রাতেই। সকালের কাজ বলতে, এই একটু বাজার করা, একটু রান্নাতে সাহায্য করে দেওয়া, আর মেয়েগুলোর কিছু কাজ করে দেওয়া। এখানেই সময়টা মারায়। মাগীগুলোর কাজ আর শেষ হয় না, তাদের কাপড় কেচে দেওয়ার থেকে আরম্ভ করে প্রতিদিনের চাদর কাচা। কয়েকমাস আগে কাড্ডুদা একটা কাচার মেশিন কিনলেও তাতে সব কাচা হয় না। জিজ্ঞেস করলে বলে,‘কারেন্টটা কোথা থেকে আসবে?’ মোহর গাল দিলেও কাচাগুলো নিয়ে বাইরে বসে। ঘরের তো অনেকগুলো চাদর। সব ভাল তবে মেয়েগুলোর কাপড় কাচতে খুব খারাপ লাগে, ঘেন্না করে। কত দিন সায়া বা প্যান্টে কত কিছু লেগে থাকে। তিনটে ঘরের বিছানার চাদরও প্রতিদিন কাচতে হয়। শালাদের কোনও ইয়ে নাই, চাদরেই সব ফেলে রাখে। কোন দিন ঘরের বেগমটার কোন কিছু কাচল না, এখানে ঐ সব কাচা। কোনও কোনও দিন আবার বাথরুমের ভিতর ঢুকে মাগীগুলোর পিঠের ময়লা তুলতে হয়। মোহরের এই কাজটা ভাল লাগলেও বেশি ক্ষণের সুযোগ পায় না। আবার একটু এদিক ওদিক হাত গেলেই ওরা বলে ওঠে, ‘ওরে শালা, মাগনাতে পাবি নাকি?’ মোহর হাসে। বলে, ‘তোমাদের কত কাজ করে দি বল তো।’
–কাজ করিস মাইনে পাস।তার ওপর উপরি তো আছেই।
তবে বাজারটা বেশ কয়েকবারেই যেতে হয়। সেটা মোড়ের মাথার ছোট বাজার হোক বা একটু দূরে বড় বাজার। বাজারে বার বার যেতে যেতেই মোহরের সবার সঙ্গে একটা জানাশোনা হয়ে গেছে, গল্প করে। পাড়ার লোকের সঙ্গে দেখা হলে কথাবার্তা বলে। মোড় মাথাতে বিল্টু মাস্টারের বাড়ি। কোথাকার এক সরকারি স্কুলের মাস্টার। দেখা হলেই মোহর তার সাথে কথা বলে। দু’এক বার তার সাঙ্গে বাজার থেকে বাইকে চেপে ফিরেছে। কিছু জিজ্ঞেস না করলেও মাঝে মাঝে বলে, ‘পাড়ার মাঝে এটা ভাল দেখায় না, কিন্তু আমার কী বল। পার্টির লোক নেতা, বা সরকারি কোনও লোক কেউ তো কিছু বলে না, আমার কী বল।’ মোহর অবশ্য কাড্ডুদাকে এই কথাগুলো বলেনি।
সারাটা দিন মোহরের খুব পরিশ্রম হলেও রাতে বেরোনোর সময় সব কাস্টমারই কিছু না কিছু দিয়ে যায়। ভাল লাগা বলতে এটাই। এমনি তো কাড্ডুদা লোকটা ভালই। মাসের প্রথমে পেমেন্ট দিয়ে দেয়। দোকান বাজার থেকেও টুকটাক ভালই হয়। খরচাও তো কিছু নেই খাবার দাবার সবটাই ফিরি। দু’ এক গ্লাসও সন্ধের দিকে জুটে যায়। এই নিয়ে অবশ্য তার নিজের গ্রামের লোকের রাগ আছে। গ্রামে কয়েকমাস আগেই বড় মসজিদে এক সন্ধের দিকে খেপ বসেছিল। কে নাকি গাঁয়ে মোহরের কথাগুলো রটিয়ে দিয়েছিল। অবশ্য শুধু সে জন্যি নয়, তাও মোহরের কথাটা আলোচনা হল। এখন আর সবার সব কথা শুনতে ভাল লাগে না। কাছে গাঁ হলেও সপ্তাহে একবারই যায়। আব্বা আম্মি নাই, এখানে কাজ করতে ঢোকার পরে ভাই বোনেরাও আর যোগাযোগ রাখে না। শুধু ডালিয়া বেগম তার জন্যেই সপ্তাহে একবার সকালের দিকে যেতে হয়। বিয়ের চার বছরেও ছেলে মেয়ে হয়নি বলে গাঁয়ের সবাই বলে, ডালিয়াও বলে। মোহর রাতে থাকতে পারে না। রাতে থাকবার কথা শুনলেই কাড্ডুদা রেগে যায়। বলে, ‘কাস্টমার এলে কে দেখবে আমি? তুই ভোরের আলো ফুটলে প্রতিদিন যা, বিবির পোঁদে মাথা রেখে ঘুমা, কিন্তু তাড়াতাড়ি ফিরতে হবে। আমার লক্ষ্মীরা উঠে গেলে তোর কাজ শুরু।’ সারাটা রাত জেগে এমন ভাবে সকালে যাওয়া যায়?
কথাগুলো শুনলে আবার ডালিয়া রেগে যায়। বলে, ‘তোমার আমাকে কেন ভাল লাগবে, ঐ সব বেবুশ্যে মাগীদের সঙ্গে থাকলেই তো সব পাবে। ঘরের বউকে তখন কি আর মনে লাগে?’
মোহর ডালিয়াকে বলতে পারে না সেই ইচ্ছে থাকলেও উপায় নেই। তবে মোহরের ডালিয়াকে নিয়ে খুব গর্ব। এখনও গাঁয়ে ঘরে এমন বউ সবার ঘরকে দেখা যায় না, নামটাও বেশ। কিন্তু কাড্ডুদার জায়গাতে তো কোনওদিন কারওর সঙ্গে কিছু করেনি। শুধু তাদের খোলা পিঠে ব্যথার মলম লাগিয়ে দিয়েছে, সাবান লাগিয়ে ময়লা ঘষে পরিষ্কার করে দিয়েছে। পাঁচজনের শরীরে কার কোথায় কী আছে দেখলেও কারওর ভিতরে ঢোকার সাহস হয় নি। বলা যায় না কাড্ডুদা জানতে পারলে মাইনের অর্ধেকটাই না কেটে নেয়। যে লোকটা থানার বড়বাবুর কাছ থেকে পয়সা নেয় তার কাছে আশ্চর্যের কিছু নেই। মুসকিল হল কাড্ডুদার বাকি কোনও কথা শোনা যাচ্ছে না। কবে থেকে বলছে, ‘শালা মোহর নতুন মালের সন্ধান কর, পুরানো এই সব বুড়ি মাগীদের দিয়ে আর কত দিন চালাব বলতো?’
–দাদা মাল তো আসছে। ঐ যে দুটো বৌদি আসছে, তাদের দিয়ে তো….
-ওরা তো সন্ধে বেলায় আসে। রাতের বেলাতেই তো বেশি লোক আসে। তাদের জন্যেও তো ভাবতে হবে। তুই এক কাজ কর, ঐ কুঞ্জবতি কমপ্লেক্সের তপন স্যারের বাড়িতে একবার যা। ঐ শালিকে ফোনে পাচ্ছি না। কিছু কলেজের মালের কথা বলছিল, বলবি আমি লক্ষ্মীশ্রী গেস্ট হাউসে কথা বলে রেখেছি। মালের কথা বললেই ফোন নম্বর দিয়ে দেব। আর ঐ মুচিদের বাড়ি যাচ্ছিস? ছোট বউটার সাথে কথা বল। তোর গাঁয়ে গেলেও মাথায় রাখিস।
মোহর সব কথাগুলো শোনে। তপন স্যরের বাড়ি এর আগে কোনওদিন যায়নি। শুনেছে কোন এক সরকারি ইস্কুলের মাস্টার বটে। তবে ওর বউটার হাতে অনেক মাগী। এখানকার অনকগুলো কলেজের মেয়ে ওর হাতে। মোহর কুড়োঝোর মোড়ের মদের দোকানে অনেকবার মেয়েগুলোকে মদ কিনতে দেখেছে। শালিদের কুনু লজ্জা নাই। যা ডেরেস পরে দেখেই মোহরের টনটন করে ওঠে, পেলে চটকে খাল বানিয়ে দেবে। কয়েকদিন আগেই বাজারের একটা সব্জির দোকানে কয়েকজন বলাবলি করছিল, ‘বাপেরা পড়তে পাঠায়, আর ওরা এখানে এসে ফস্টিনষ্টি করছে।’ তাতে অবশ্য মোহরের কোনও দরকার নেই, দুএকটা এখানে এলে সবার সঙ্গে ওর নিজেরও লাভ।
সারাটা দিন মোহরের খুব পরিশ্রম হলেও রাতে বেরোনোর সময় সব কাস্টমারই কিছু না কিছু দিয়ে যায়। ভাল লাগা বলতে এটাই। এমনি তো কাড্ডুদা লোকটা ভালই। মাসের প্রথমে পেমেন্ট দিয়ে দেয়। দোকান বাজার থেকেও টুকটাক ভালই হয়। খরচাও তো কিছু নেই খাবার দাবার সবটাই ফিরি। দু’ এক গ্লাসও সন্ধের দিকে জুটে যায়। এই নিয়ে অবশ্য তার নিজের গ্রামের লোকের রাগ আছে। গ্রামে কয়েকমাস আগেই বড় মসজিদে এক সন্ধের দিকে খেপ বসেছিল। কে নাকি গাঁয়ে মোহরের কথাগুলো রটিয়ে দিয়েছিল।
ঘরে ঢুকে দোকানের ব্যাগটা নামাতেই একটা ঘরের ভিতর থেকে গলা ভেসে আসে, ‘কিরে মোহর এলি? একবার এঘরে আসবি।’ মোহর বুঝতে পারে সুলেখাদি ডাকছে। এখানকার সব থেকে সুন্দরী, সেরকম দেমাক। প্রতিদিন তিনজনের বেশি কাউকে ঘরে নেয় না। রেটও বেশি। কাড্ডুদা বেশ তোয়াজ করে। চেনা কাস্টমাররা এসেই তাকে খোঁজে, না পেলে অনেকে বসেও থাকে। তবে খুব কিপটে, কিছু কিনতে দিলে সব পয়সার হিসাব নেয়। মোহর বুঝতে পারে এখন ডাকা মানেই কিছু আনতে বলবে। ইচ্ছে না থাকলেও মোহর ঘরে ঢুকে বলে, ‘কিছু আনতে হবে নাকি?’
–হ্যাঁরে। মোড় মাথায় তপুদার দোকান খুলেছে? দুটো প্যাড আনতে হবে।
–প্যাড! কাড্ডুদা জানে?
-বালের বকিস না মোহর, আমার মাসিক কি কাড্ডুদাকে জিজ্ঞেস করে আসবে?
-তুমি আনতে বলছ এনে দিচ্ছি, আজ কিন্তু শনিবার। তুমি ওষুধ খেতে পারতে, আগের মাসেও ঝামেলা হয়েছিল।
সুলেখাদি শেষের কথাগুলো শুনে কিছু সময় চুপ থেকে বলে উঠল, ‘আমি সন্ধে থেকে ওপরের কোয়ার্টারে চলে যাব, আজ দুটো বৌদি আসে না? ফোন করে ওদের একটু তাড়াতাড়ি আসতে বল, তাতেই ম্যানেজ হয়ে যাবে। আর কাড্ডুদাকে বলবি, আমার খুব জ্বর।’
-সে তোমরা যা খুশি করগে, আমাকে যেন কিছু না শুনতে হয়।
–তোকে কী শুনতে হবে রে বোকাচ্চোদা? কিছু কি শুনতে হয়? গেঁড়ে বেশি ফ্যাচফ্যাচানি করিস না।
কথাগুলো শেষ হবার সঙ্গে সঙ্গে পাশের কোর্য়াটার থেকে চট্টরাজ কাকুর গলা কানে এল। মোহর এবার বাইরের বাগানে বেরিয়ে আসতেই কাকু তাকে দেখে খুব রেগে বলে উঠলেন, ‘কাড্ডু কইরে?’
–দাদা তো এই সময় থাকে না।
–কতবার বলব, বাইরে একটা সব সময়ের জন্য লোক রাখ। কালও সন্ধেবেলাতে আমার কোয়ার্টারে তোদের লোক চলে এসেছিল। আমার বাড়িতে ছেলের বৌমা আছে, নাতনিরা আছে। এরকম করে তো থাকা যাবে না।
-কিন্তু কাকা সন্ধেবেলাতে তো আমি বাইরেই ছিলাম।
-তাহলে কি আমি মিথ্যে বলছি ?
–না কাকা, তা কেন হবে? হয়ত আমি সেই সময়টাতে দোকানে গিয়েছিলাম। ঠিক আছে আমি দাদাকে বলে দেব।
মোহরেরও মাঝে মাঝে বিরক্ত লাগে। যত সব উটকো ঝামেলা। কাড্ডুদাও এই সময় থাকে না, মাগীগুলোতো কেউ বেরোবে না, দাদা বারণও করে গেছে। মোহর কখনও কারওর সঙ্গে খারাপ কথা বলে না, খারাপ ব্যবহার করে না। কাড্ডুদা এক্কেবারে বারণ করে দিয়ে বলেছে, ‘শোন, ব্যবসা করতে গেলে লোকাল লোকদের এক্কেবারে ঘাঁটাবি না। মনে রাখবি টাউনসিপে এই রকম একটা ব্যবসা করা খুব কিচাইন কাজ, আমি যতই টাকা ছড়াই, একটু এদিক ওদিক করলেই পিছনটা মারিয়ে যাবে।’
মোহর এই ব্যাপারটা ভালই শিখে নিয়েছে, ঠিক দাদার মতোই। দাদা এই ঘরের ভিতরে যতই সবাইকে খিস্তি মেরে কথা বলুক, বাইরে সবার সাঙ্গে এত ভাল ব্যবহার করে যেন ওর থেকে ভাল লোক আর কেউ নেই। মোহরও কাড্ডুদা না থাকলে এই সব ব্যাপারগুলো বেশ ভালই সামাল দেয়। কাড্ডুদাকে আর-এক জনকে কাজে নিতে বলতে হবে। ও ব্যাটা সব সময় বাইরে থাকবে, কিছুতেই ঘরের ভিতরে কোনও কাজে আনা যাবে না। সব ব্যাটা বদমাইস ঘরের ভিতর এলেও আবার অন্য ধান্দা করবে। কিন্তু বিশ্বাসি লোক কোথায়, গাঁয়ের কাউকে বলবে? না, উপরিগুলোও তো দু’ভাগ করতে হবে। পরে সব ভাবা যাবে।
একটা ভাঙা ছাতা নিয়ে তপন স্যরের বাড়ির দিকে যাবার রাস্তায় পিছন থেকে তার নাম শুনে থমকে দাঁড়াতে হয়। ঘাড় ঘোরায়, দেখে কবির চাচা ডাকছে। একটা কোয়ার্টারের বাগানের কাজ করছে। মোহর কাছে যেতেই বলে, ‘তুই এই কাজ ছেড়ে কি করছিস বলতো? গাঁয়ে কিন্তু কথা হচে। তুর বউটকে সবাই বলছে।’
সেই সময় চাচার কথাগুলো ভাল না লাগলেও রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে কথাগুলো মনে আসে। সত্যিই তো এই টাউনশিপে বাগানের কাজ করতেই আসা। কোথা থেকে কীভাবে যে জড়িয়ে গেল কে জানে? এখন আর বাগানের কাজ করতেও ভাল লাগে না। ওতে এই রকম পয়সাও তো নাই।
২
কয়েকমাস ধরেই কাড্ডুর মটকা গরম। কথায় কথায় রেগে যাচ্ছে। ব্যবসাটা আগের মতো আর চলছে না। মোহরের প্রথম দিন গুলোর কথা মনে পড়ে। প্রতিমাসে একটা কোয়ার্টারে বাগান পরিষ্কার করত মোহর। সেখানেই যাতায়াত ছিল কাড্ডুদার। একদিন নিজের থেকে বিভিন্ন কথা জিজ্ঞেস করে। দিনে কত রোজগার হয়, বাড়িতে কে কে আছে এই সব। সব শুনে দেখা করতে বলে। তারপরেই এই কাজে ঢুকতে বলে। মোহর প্রথমটাতে রাজি ছিল না। ঘরে কেউ নাই, কাউকে জিজ্ঞেস করবারও কিছু নেই, তাও গাঁয়ের লোক কাজের কথা শুনেই বলে, ‘শেষে বেশ্যাবাড়ির কেয়ারটেকার! এটা আবার কাজ হল?’
ডালিয়াও রাজি হয় না,বলে, ‘না না, এমন কাজ করতে হবে না। তার থেকে গাঁয়ে থাকো, মাঠের কাজ কর, টাউনশিপে বাগানের কাজ কর, একশ দিনের কাজ তো থাকলই।’
কাড্ডুদা লোভ দেখায়,‘বাগানে কত টাকা পাবি? এখানে মাইনে পাবি। প্রতিরাতে উপরি পাবি, বাবুদের পান সিগারেট এনে দিবি, বাবুরা কি টাকা ফেরত নেবে? সেই সব তো তোর। আর গাঁয়ে তুর বউ থাক, এই তো রাস্তা, একফাঁকে গিয়ে দেখে আসবি।’ মোহর কাজে ঢোকে। সেই সময় সন্ধে থেকেই সারি সারি গাড়ি এসে কোয়ার্টারের সামনে ছোট্ট ফাঁকা জায়গাতে দাঁড়াত। শনি বা রবিবার গাড়ি বাড়ত। অনেক লাল বাতি মাথার গাড়িও থাকত। মোহর গাড়িগুলো রাখার ব্যবস্থা করে দিত, সিগারেট, পান এনে দিত। বোতল কাড্ডুদা এনেই রাখত। তাও বিশেষ প্রয়োজনে রাতের দিকে তপুদার দোকানে বোতল আনতে যেতে হত। তপুদা দিনের বেলা বোতল না দিলেও অনেক রাত অবধি দোকান খোলা রাখত। তখন কাড্ডুদার ব্যবসাও চলছে রমরম করে। মোহর কাজে ঢোকার পরে ভাইবোনেরা পরিষ্কার বলে দেয়, ‘এক্কেবারে বাড়ির দিকে আসবি নাই। বেশ্যা ঘরের দালাল, তুর নজর সব সময় মাগীদের দিকেই থাকবেক, আমাদেরও বউ বাচ্চা আছে।’ দাদা দিদিদের সঙ্গে না যোগাযোগ থাকলেও মোহর ডালিয়েকে ভুলিয়ে দেয়। প্রতিদিনই গাঁয়ে যাবার সময় স্নো, পাউডার শাড়ি, ব্লাউজ, বা কোনও গয়না, নাহলে খাবার কিছু না কিছু কিনে নিয়ে যায়। ডালিয়া খুশি হয়, শুধু বেগমকে কাছে টেনে আদর করবার সময় হাঁপিয়ে যায়। ডালিয়া বলে ওঠে, ‘তুমার জানে আর তাগদ নাই, তুমি ঐ বেশ্যা বাড়ির কেয়ারটেকার হয়েই থাকবে।’ মোহরের কথাগুলো ভাল লাগে না, জানে লাগে। কিন্তু করবার কিছু নাই। দুপুরের আগে আস্তে আস্তে কাড্ডুদার কোয়ার্টারে ফিরে আসতে হয়। ডালিয়া রাগে, বলে ওঠে, ‘এই রকম ভাবে রাতের পর রাত একা ভাল লাগে না, তুমি অন্য কাজ দেখো।’
-অন্য কাজ কোথায় পাব?
-কেন গাঁয়ের বাকি সবাই কী করছে? তারা কি সবাই বেশ্যা বাড়িতে কাপড় কাচার কাজ করে। তোমার অন্য ধান্দা আছে, সেটা বল। তোমাকে বললাম শুনলে ভাল না হলে আমাকে অন্য ব্যবস্থা করতে হবে।
কয়েকমাস ধরেই কাড্ডুর মটকা গরম। কথায় কথায় রেগে যাচ্ছে। ব্যবসাটা আগের মতো আর চলছে না। মোহরের প্রথম দিন গুলোর কথা মনে পড়ে। প্রতিমাসে একটা কোয়ার্টারে বাগান পরিষ্কার করত মোহর। সেখানেই যাতায়াত ছিল কাড্ডুদার। একদিন নিজের থেকে বিভিন্ন কথা জিজ্ঞেস করে। দিনে কত রোজগার হয়, বাড়িতে কে কে আছে এই সব। সব শুনে দেখা করতে বলে। তারপরেই এই কাজে ঢুকতে বলে। মোহর প্রথমটাতে রাজি ছিল না।
রেগে ওঠে মোহর। অন্য ধান্দা! থাকলে আরও দুতিনটে বিয়ে খুব সহজেই করতে পারত। মোল্লা পাড়ার আসমিনার এখনও নিকা হয় নাই, রাস্তায় দেখলেই কথা বলে, চোখ ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখে। কয়েকমাস আগেই একটা জলসা শুনতে গিয়ে এক্কেবারে পাশেই বসে ছিল। গান শুনে এক্কেবারে গায়ে পড়ে যাচ্ছিল, বললে, ‘আমার একটা কাজ দেখে দাও না গো, খুব অসুবিধা, ভাইট পালাইছে, একা আব্বু আর পারে না।’ কাজ তো আছে, কিন্তু সে কি তুর জন্য আসমিনা। কথাগুলো বলতে পারে না। যেমন ডালিয়াকে আসমিনার কথা বলতে পারে না। তবে ডালিয়া কয়েকবার আসমিনার কথা বলেছে। মোহর অবশ্য কিছু জিজ্ঞেস করতে পারে নি। আরও অনেক কিছুই তো জিজ্ঞেস করতে পারেনি, করলে এক্ষুনি ঘরে চলে আসবে। ডালিয়ার সেটাই ভাল হবে, থাক সতিনের সাথে। মোহর আস্তে আস্তে কাড্ডুর বাড়ির দিকে পা বাড়ায়।
৩
কাড্ডু এখন প্রতিদিন সন্ধেবেলা এই কোয়ার্টারে এসে যায়। কিছু দিন আগে পর্যন্ত সকালে সব কিছু দেখবার জন্য একবার আসত, আর শনি রবিবার সন্ধেবেলাটাতে থাকত। এখন প্রতি সন্ধেয় আসতে দেখে মোহরের একটু সন্দেহ হয়। এক সন্ধেয় কাড্ডুর কাছে দাঁড়াতেই দাদা বলে ওঠে, ‘দিন ভাল নয় মোহর, ব্যবসা ভাল হচ্ছে না। ঐ শালা তপন স্যারের বউ খুব বাওয়াল দিচ্ছে, কোথা থেকে নতুন নতুন মেয়ে আনছে কে জানে, রেট কম দিচ্ছে, শালা বাড়িতে পাঠিয়ে দিচ্ছে। তার উপর চারদিকে বিউটি পার্লার গুলো তো আছেই।’
মোহর তপন স্যরের বউএর সঙ্গে একবার দেখা করতে গেছিল। দেখে বুঝতেই পারেনি এই মাগী এত বড় ব্যবসা চালায়। কী সুন্দর বাবু বাবু বলে কথা বলে। মোহর যখন বাড়িতে পৌঁছালো তখনই স্নান করে বাগানে কাপড় মেলছিলেন। মোহরকে বাড়িতে বসিয়ে চা খাওয়ানোর পর কাজের কথা শুনে বললেন, ‘বাবুরে সবই তো বুঝলাম, তুই কাড্ডুকে একবার আসতে বলিস, আমি কথা বলব।’
মোহর একটু অবাক হয়। কাড্ডুদাকে ফিরে সব কথাগুলো বলতেই কাড্ডুদা উত্তর দেয়, ‘মাগী মহা ঘোড়েল মাল, এক হাটে কিনে বিক্রি করে দেবে, অথচ কাউকে বুঝতেই দেবে না, তুই এক কাজ কর, মাল জোগাড় কর, আরও এক্সট্রা পাবি। বাড়ির বৌ, মেয়ে কেউ বাদ নয়, যত মাল আনবি, তুই তত মাল পাবি।’
মোহর এবার ছুটে বেড়াতে আরম্ভ করে। আশে পাশে অনেকগুলো গার্লস হোস্টেল আছে। মোহরে সেখানে যাওয়া আরম্ভ করে, তাদের গেটের দারোয়ানদের সঙ্গে আলাপ করে। নিজের গ্রামের কয়েকজন লোককে পায়। কিন্তু সেই রকম সুবিধা করতে পারেনা। তাদের মাধ্যমে প্রতিটা হোস্টেলের কয়েকজনের সঙ্গে কথাও হয়। আস্তে আস্তে সব দিক দেখতে পায়, ফোন নম্বর জোগাড় করে কাড্ডুদাকে দেয়। এদিকে শহরের বেশ কয়েকটা ছোট কারখানা বন্ধ হয়ে যায়। কাড্ডুদার কথামতো মোহর কয়েকজনের বাড়িতে যোগাযোগ আরম্ভ করে। আরও কয়েকজন বৌদি নিয়মিত ভাবে আসতে আরম্ভ করলেও কাড্ডুদার পছন্দের কলেজের মেয়েরা আসে না। কথায় কথায় মোহরকে বলে, ‘খানকির ছেলে সেই ঝোলাবুড়িদেরকেই পেলি, এবার সারারাত তুই মারা।’ রাত নামলে কোয়ার্টারের সামনের ভিড়টা না বাড়লে কাড্ডুদা আরও রেগে যায়। খিস্তি করে।
৪
মোহরের এখন কাজের খুব চাপ। অনেক জায়গা ঘুরতে হয়। এক মাস গাঁয়ে যেতেই পারেনি। মাঝে একদিন কবির চাচার সঙ্গে দেখা হতেই চাচা অনেক কথার মাঝে বলে, ‘তুর বৌটাকে এবার সামলা, তুই তো যাওয়া বন্ধ করেছিস, কিন্তু ও বেটি দুপুর দুপুর কোথায় বেরিয়ে যাচ্ছ, সঙ্গে ঐ মুল্লা পাড়ার আসমিনাও থাকছে।’
–টাকা পাঠাচ্ছি তো চাচা।
-আরে টাকাতেই কি সব হয়?
–ঠিক আছে আজ ফুলু বেটিদের একবার ফোন করব।
মাথাটা গরম হয়ে যায় মোহরের। কাড্ডুদাকে বলতেই দাদা অবশ্য হেসে বলে, ‘ভালই তো এবার এখানে নিয়ে চলে আয়। দু’জন মিলে রোজগার করবি। তোর বউ তোর কাছেই থাকবে।’

কথাগুলো মোহরের ভাল লাগেনা। কাড্ডুদা এখন আর মানুষ নাই। প্রতিটা মেয়ের মধ্যেই ব্যবসা দেখছে। দু’জন আগের মাসে অন্য জায়গায় চলে গেল। কাড্ডুদা তারপরের দিনেই আরও দু’জন নতুন মেয়েকে নিয়ে এসে বলে, ‘বুঝলি মোহর, আমার নাম কাড্ডু মজুমদার, এখানকার ওপর থেকে নীচ সব আমার কেনা, না হলে এই টাউনশিপে এই রকম ব্যবসা করতে পারি। দুটো মাগী আমাকে বলে কিনা আরও বেশি টাকা নেবে। আমি কিছু বলিনি, সোজা রাস্তা দেখিয়ে দিলাম। এবার চরে খা। এখানে আর কোনওদিন মালের অভাব হবে না রে, ব্যবস্থা করে নিয়েছি, অনেকে বসে আছে, শুধু জানতে হবে।’
মোহর এই সব জানে, কিন্তু সত্যিই কি মালের অভাব নেই? তাহলে এমন অবস্থা কেন হচ্ছে? আশেপাশে অনেক পুজো, অনুষ্ঠান, ব্লাড ডোনেশন, সবে কাড্ডুদা আগের থেকে বেশি করে টাকা দিচ্ছে। সব পার্টি খেয়ে আছে, কোয়ার্টারে অনেকে চাঁদার নামে টাকা নিতে আসে, মোহর তাদের হাতে টাকা তুলে দেয়, সব জানে। কারওর মুখে কোনও শব্দ নেই। কোন পার্টি কিছু ঝামেলা করছে সে খবর দাদার কানে যেতেই বড় পার্টি অফিসে ফোন করে সব গুছিয়ে নেয়। সব ঠিক আছে কিন্তু এখানে মাল নেই। তবে দাদা কয়েকদিন আগেই বলছিল, ‘এমনি ভাবে হবে না মোহর, অন্য ব্যবস্থা করতে হবে।’ মোহর অবাক হয়ে তাকিয়ে প্রশ্ন করেছিল,‘অন্য ব্যবস্থা কী?’
-এই শহরের চারদিক অনেক বিউটি পার্লার হয়েছে। বাইরে টাটকা মেয়ে ঘুরছে। এদের ধরলে মাল আর মাল। মোড় মাথার ওষুধের দোকানের বাবুদা বলছিল, পিলের নাকি এখন দারুণ বিক্রি বেড়েছে। আর এই কলেজের মালগুলোর খরচাও খুব। এত টাকা কিভাবে আসবে বলতো? সব কামাচ্ছে। তুই একটা ভেড়া। একটাও ভালো মাল আনতে পারিস না। লোকে কত আর এই ধ্যাবড়া মাগীগুলোর জন্য আসবে বলতো? আমার ব্যবস্থা আমাকেই করতে হবে।
কথাগুলো মোহরের ভাল লাগেনা। কাড্ডুদা এখন আর মানুষ নাই। প্রতিটা মেয়ের মধ্যেই ব্যবসা দেখছে। দু’জন আগের মাসে অন্য জায়গায় চলে গেল। কাড্ডুদা তারপরের দিনেই আরও দু’জন নতুন মেয়েকে নিয়ে এসে বলে, ‘বুঝলি মোহর, আমার নাম কাড্ডু মজুমদার, এখানকার ওপর থেকে নীচ সব আমার কেনা, না হলে এই টাউনশিপে এই রকম ব্যবসা করতে পারি। দুটো মাগী আমাকে বলে কিনা আরও বেশি টাকা নেবে। আমি কিছু বলিনি, সোজা রাস্তা দেখিয়ে দিলাম। এবার চরে খা। এখানে আর কোনওদিন মালের অভাব হবে না রে, ব্যবস্থা করে নিয়েছি, অনেকে বসে আছে, শুধু জানতে হবে।’
মোহর একভাবে সব কথা শুনে যাচ্ছিল। কী বলবে? মনে হচ্ছে আবার সেই বাগানের কাজেই ফিরে যেতে হবে। গাঁয়ে যেতে হবে একবার। অনেকদিন ডালিয়াকে চটকানো হয় নি, আসমিনার কাছেও যেতে হবে, ওর আব্বার শরীরটাও ভাল নেই।তাছাড়া কবির চাচার কথাগুলোও শুনতে হবে।
কাড্ডুদাকে একবার ছুটির জন্য বলতে যাবে এমন সময় কাড্ডুদা মোহরের দিকে তাকিয়ে বলে,‘এই শোন তোদের গাঁ থেকে দুটো মাল ঐ তপনার বউ এর খাতায় নাম তুলেছে, এক্কেবারে নতুন মাল। দুপুর দুপুর বিউটি পার্লারে যায়। খুব চলছে এখন। তুই একটু এখানে আনা যায় কিনা দেখ। ’
–না দাদা, গাঁয়ের কাউকে কিছু বলিনা, একেই আমাকে লিয়ে সব কত কি কথা বলে।
-আরে মাল ফেললে কোনও শালা কোনও কথা বলে না। তুইও গাঁয়ে মাল ছড়া, দেখবি সব চুপ হয়ে গেছে। নে ফটো দুটো দ্যাখ।
৫
দিন দুপুরে এ’পাড়াতে এর আগে এত পুলিশ কখনও আসেনি। পাড়ার লোকেও সব বাইরে বেরিয়ে দেখছে। কাড্ডুর কোয়ার্টার থেকে লাইন দিয়ে মুখ ঢেকে সব মেয়ে বেরোচ্ছে। কাড্ডুকে একটা বড় জিপে তুলেছে, পাশে আর-এক ভদ্রমহিলাও আছেন। এপাড়াতে এই মহিলাকে কয়েকজন চেনে– তপন মাস্টারের বউ।
শুধু ধরা পড়েনি মোহর আলি। কয়েকমাস আগেই ও কাজ ছেড়ে এখন গাঁয়ে থাকে। ডালিয়াকে ছেড়ে এখন অন্য একজনকে নিকা করেছে। নাম রেশমা। আসমিনার আব্বু মারা যাওয়ার পর এখন তাকে আর গাঁয়ে থাকতে দেয় না, গাঁয়ে থাকে না ডালিয়াও। মোহর প্রতিদিন সকালে টাউনশিপে কোয়ার্টারে বাগানে কাজ করতে এসে কাড্ডুদার বন্ধ হয়ে থাকা কোয়ার্টারের পাশ দিয়ে বার বার গেলেও ঘাড় তুলে তাকায় না। ভয় লাগে যদি কাড্ডুদা বুঝে ফেলে বিল্টু মাস্টারের চিঠির মাধ্যমে উপর মহলের সবাই সব কিছু জানতে পারলেও আসল কলকাঠি তো মোহর আলির হাতেই ছিল। অবশ্য কাড্ডুরও কোনও দোষ নেই। ও কী করে জানবে ছবি দুটো ডালিয়া, আর আসমিনার ছিল।
ছবি সৌজন্য: Wikimedia Commons
লেখালেখির সূত্রপাত ছোটবেলায়। বর্তমানে শিক্ষকতার পাশাপাশি নিয়মিত কবিতা ও গল্প লেখেন তথ্যকেন্দ্র, গৃহশোভা, নবকল্লোল দৈনিক স্টেটসম্যান, সুখবর, সাতসকাল, দেশ, আনন্দবাজার রবিবাসরীয়, এই সময়-সহ আরো বহু বাণিজ্যিক পত্রিকায়। এই পর্যন্ত ইংরেজিতে লিখিত কবিতা ও গল্প ভারত-সহ বহু দেশে প্রকাশিত। নিবন্ধ ও ছোটগল্প প্রকাশিত হয়েছে বাংলালাইভ, মহানগর, দ্য ওয়াল-সহ বহু অনলাইন ম্যাগাজিনে। প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা সাত।