‘লপসি’ চেনা শব্দ। কিন্তু সত্যি কি চেনা শব্দ? হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিধানে ‘লপসি’ পাওয়া যাবে না, পাওয়া যাবে ‘লপ্সিকা’। সে বড়লোকের খাবার। হরিচরণ বিবরণ দিয়েছেন, ‘ঘৃতে ভাজা ময়দা ও চিনি দুধে মিশাইয়া লবঙ্গমরিচাদি দিয়া পাক করিয়া ঘনীভূত করিলে লপ্সিকা হয়।’ ময়দার বদলে সুজিও দিতে পারেন– খেতে বেশ লাগবে। ঘিয়ের গন্ধে বাড়ি ম ম করবে। কিন্তু ‘লপ্সিকা’ আর ‘লপসি’ তো এক বস্তু নয়। সংস্কৃত ‘লপ্সিকা’ থেকেই ‘লপসি’ এসেছে বটে, কিন্তু বাংলা ভাষায় ‘লপসি’ বলতে আমরা সচরাচর বুঝি ‘জেলের লপসি’ অর্থাৎ কয়েদিদের জন্য একরকম তরল খাবার– ডাল, ময়দা মিশিয়ে-টিশিয়ে বানানো। তার মধ্যে জলত্ব এতই প্রবল যে সে আর চেটে খাওয়ার অবস্থায় থাকে না, কোনওরকমে গিলে ফেলে বেচারা কয়েদিদের শরীর ধারণ করতে হয়।
জেলের লপসির মতোই অনেক সময় চেহারা নেয় কাঙালি-ভোজনের খিচুড়ি। তাতে চাল-ডাল প্রায় নেই, যা আছে তা হলুদ গোলা লবণাক্ত জল। গরীব মানুষ সেই নোনা হলুদ জলই খিদের চোটে গিলছেন– আর কাঙালি-ভোজনের উদ্যোক্তারা দানবীর হওয়ার গর্বে কোলাব্যাঙের মতো মকমক করছেন। খারাপ জিনিস দান করে দানবীর হওয়ার মানুষী নেশা কেবল একালেই প্রবল নয়, সেকালে উপনিষদের যুগেও এই প্রবণতা চোখে পড়ত। নচিকেতার বাবা যজ্ঞ সম্পাদন করছেন, ব্রাহ্মণদের গরুদান করছেন। ছেলে নচিকেতা খেয়াল করেছেন দানের গরুগুলি আর ঘাসও খাবে না, দুধও দেবে না। এই গরু দান করা ও না-করা সমান। অথচ বাবার দাতা হিসেবে নামডাক হবে, আত্মতৃপ্তিও কম হবে না।
তৃপ্তি, আত্মতৃপ্তিই তো আমাদের প্রায় সবকাজেরই গোড়ার কথা। খাওয়া-দাওয়ার মধ্যেও এই তৃপ্তি থানা গেড়েছে। কথায় বলে খেয়ে সুখ, খাইয়ে সুখ। সুখ তো তৃপ্তিরই সমার্থক। বড়লোকেরা লপ্সিকা খেয়ে তৃপ্ত, নিরুপায় গরীবেরা কাঙালি-ভোজনের লপসিবৎ খিচুড়ি খেয়ে খুশি। না-খাওয়ার চাইতে লপসি খাওয়া ভালো। প্রশ্ন হল জেলের কয়েদিরা শরীর ধারণের জন্য লপসি খান বটে, কিন্তু বিকল্প উপায় থাকলে কি তাঁরা লপসিতে আটকে থাকবেন?

জেলের মধ্যে টাকাপয়সা থাকলে যে সবরকম পরিষেবা পাওয়া যায় এ-তথ্য বলিউডি ছবিতে সত্য হিসেবে বহুবার প্রদর্শিত। রাজনৈতিক যোগাযোগ ও ক্ষমতাসম্পন্ন দুর্নীতিপরায়ণদের জেল হয়, কিন্তু জেলে আহার-বিহারের অভাব হয় না। এই ট্র্যাডিশনের শুরু কবে থেকে? ইংরেজ আমলেই এই ট্র্যাডিশনের জন্ম হয়েছিল– এমনিতে জেলে কয়েদিদের জন্য বরাদ্দ লপসি। কিন্তু ঠিকমতো টাকাপয়সার ব্যবস্থা করতে পারলে মিলত লপ্সিকা, অর্থাৎ ভালো খাবার। উপেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘নির্বাসিতের আত্মকথা’ তার সাক্ষ্য বহন করছে। উপেন্দ্রনাথ তখন আলিপুর জেলে। মানিকতলার বোমার মামলায় আসামি হিসেবে আরও অনেকের সঙ্গে ধরা পড়েছেন। সেখানে খাবার-দাবার তাঁর ভাষায় এক্কেবারে ‘কটমটে গদ্য’।
‘সকাল বেলা উঠিতে না উঠিতেই প্রকাণ্ড কালো জোয়ান বালতি হইতে সাদা সাদা কি খানিকটা আমাদের লোহার থালার উপর ঢালিয়া দিয়া গেল। শুনিলাম, উহাই আমাদের বাল্যভোগ এবং আলিপুরী ভাষায় উহার নাম লপ্সি। লপ্সি কি রে বাবা! শচীন দূর হইতে খানিকটা পরীক্ষা করিয়া বলিল, — ‘ওহো! এ যে ফেন মেশান ভাত!’ পরদিন দেখিলাম ডালের সহিত মিশিয়া লপ্সি পীতবর্ণ ধরিয়াছে; তৃতীয় দিন দেখিলাম উহা রক্তবর্ণ। শুনিলাম, উহাতে গুড় দেওয়া হইয়াছে এবং উহাই আমাদের প্রাতরাশের রাজ সংস্করণ!’
এই যে এক একদিন এক এক রঙের লপসি এর থেকে মুক্তির উপায়ও ছিল। সেকথাও লিখতে ভোলেনি উপেন্দ্রনাথ,
‘হঠাৎ আমরা আরও একটা পথ আবিষ্কার করিয়া ফেলিলাম। সেটা এই যে, পয়সা থাকিলে জেলখানার মধ্যে বসিয়াই সব পাওয়া যায়। জেলের প্রহরী ও পাচকের হাতে যৎকিঞ্চিৎ দক্ষিণা দিতে পারিলেই ভাতের ভিতর হইতে কৈমাছ ভাজা ও রুটির গাদার ভিতর হইতে আলু-পেঁয়াজের তরকারি বাহির হইয়া আসে; এমনকি পাহারাওয়ালার পাগড়ির ভিতর হইতে পান ও চুরুট বাহির হইতেও দেখা গিয়াছে।’
আলিপুর জেলে খানিক সুবিধে থাকলেও আন্দামানের কুখ্যাত জেলে এই সুবিধের জো ছিল না। বিপ্লবীদের ভারতের মেনল্যান্ড থেকে জাহাজে করে আন্দামানে চালান করে দেওয়া হল। সেখানে প্রত্যহ বরাদ্দ কচুপাতা সেদ্ধ। তার সঙ্গে অসহ্য শারীরিক শ্রম। উল্লাসকর দত্ত তো আন্দামানের জেলে অমানুষিক পরিশ্রমের ফলে মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। উপেন্দ্রনাথরা অবশ্য ছেড়ে দেওয়ার পাত্র ছিলেন না। তাঁরা কারাগারের প্রশাসনের বিরুদ্ধে ধর্মঘটে গেলেন। তাঁদের সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন গদর পার্টির বিপ্লবী শিখ বন্দিরা। সেলুলার জেলে পুলিশি অত্যাচারে মারা-যাওয়া আর পাগল হয়ে যাওয়া জলভাত।
সব জেলেই রবিবার ছুটি, আন্দামানের জেলে সেদিনও বন্দিদের সকালবেলায় ঘাস ছিঁড়তে হত, দুপুরে কুঠুরিতে বন্ধ থাকতে হত। এই সমস্ত অমানবিক অত্যাচারের খবর বাইরের পৃথিবীতে খানিক ছড়িয়ে পড়ায় ও বিপ্লবীদের ধর্মঘটের ফলে জেল কর্তৃপক্ষ খানিক নরম হলেন। রফা হল, জেলখানার মধ্যেও বিপ্লবীরা অন্য বন্দিদের মতো নিজেরা রেঁধে খেতে পারবেন। নিজেরাই যখন রাঁধবেন, তখন সে রান্না করা খাবার তরল লপসি কিম্বা পশুখাদ্যতুল্য কচুপাতা সেদ্ধর চাইতে একটু ভালো হওয়ার কথা। ঘি-দুধের লপ্সিকা না হোক, অন্তত একটু ভালো খাবার।

খাবার একটু ভালো হল বটে, কিন্তু খাবারের কাঁচামাল তো তেমন কিছু জেলে পাওয়া যেত না। যা পাওয়া যেত, সেই সবজি রান্নায় তাঁরা তত ওস্তাদ ছিলেন না। হেমচন্দ্র মাংস-পোলাওয়ের মতো নবাবি রান্না করতে পারতেন, কিন্তু সোজাসুজি তরকারি রান্নায় তাঁরা কেউ পণ্ডিত ছিলেন না। তবে পণ্ডিতি দেখাতে চাইতেন। কপালগুণে একবার মোচা পাওয়া গিয়েছিল। মোচার ঘন্ট কীভাবে রান্না করতে হয় তাই নিয়ে বিপ্লবীরা ‘কনফারেন্স’ বসালেন। বারীন্দ্রের দাবি, তাঁর দিদিমা হাটখোলার দত্তবাড়ির মেয়ে, পাকা রাঁধুনি। সুতরাং তাঁর পাকপ্রণালী গ্রহণ করতে হবে। হেমচন্দ্রের দাবি, তিনি ফ্রান্স-ফেরত, ফরাসি রান্না শিখেছেন। তাই তাঁর মোচাপন্থাই গ্রাহ্য।
চরমপন্থী বিপ্লবীরা শেষ অবধি হেমচন্দ্রের ফরাসি মতেই দিশি মোচা রাঁধতে বসলেন। হেমচন্দ্র তাঁর ফরাসি বিদ্যা অনুযায়ী মোচার ঘন্টে পেঁয়াজ ফোড়ন দিলেন। কালো রঙের পেঁয়াজগন্ধী যে বস্তুটি তাঁরা খেলেন তাকে ‘মোচার কাবাব’ বলা যেতে পারে। পরে একবার সুক্তো রাঁধার প্রস্তাব উঠেছিল। হেমচন্দ্র এবারও চমৎকার রেসিপি তৈরি করেছিলেন। সে রান্না একই অঙ্গে খাদ্য ও পথ্য। তাঁর অভিমত, তরকারির মধ্যে এক আউন্স কুইনাইন মিক্সচার ফেলে দিলেই তরকারি সুক্তো হয়ে যায়। এতে সুক্তোও খাওয়া হল আবার ম্যালেরিয়ার আগাম প্রতিষেধকও শরীরে গেল।

খাওয়া-দাওয়া নিয়ে জেলের মধ্যে এই নানারকম কাণ্ডাকাণ্ড যে তাঁদের পক্ষে কমিক-রিলিফ, তা বুঝতে অসুবিধে হয় না। বিশ শতকের প্রথম দশকে যখন উৎসাহী ভদ্রযুবকেরা ইংরেজদের বিরুদ্ধে চরমপন্থার পথ বেছে নিয়েছিলেন, তখন তাঁদের সেই চরমপন্থায় গোপনীয়তা ছিল, বোমা বানানোর ও বোমা মারার উৎসাহ ছিল, দেশের জন্য বিপ্লবের নামে উত্তেজনার আঁচ পোহানোর ছেলেমানুষী নেশাও ছিল। কিন্তু আন্দোলন এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সুচিন্তিত পরিকল্পনা ছিল না। তাঁদের সাক্ষ্য ও স্মৃতিকথা পড়লে তা বোঝা যায়। উপেন্দ্রনাথ, হেমচন্দ্র তাঁদের স্মৃতিকথায় এ-সময়ের কথা লিখতে গিয়ে তাই নিজেদের মত-পথ নিয়ে কৌতুক করতে ছাড়েননি। হেমচন্দ্রের লেখা ‘বাংলায় বিপ্লব প্রচেষ্টা’ বইটিতেও হাস্য-পরিহাসের খামতি নেই। বিপ্লবী যুবাদের মাথায় যে বাবু-নেতারা বসেছিলেন, তাঁদের কাণ্ডজ্ঞান হাস্যকর। হেমচন্দ্র নাম না করে লিখেছেন ক-বাবুর কথা।
‘কি করে জানি না, ‘ক’ বাবু শুনেছিলেন, নেপালের কোনো এক পাহাড়ের ওপর একজন এমন সিদ্ধপুরুষ ছিলেন, যিনি শালগাছে কদলী আর কলাগাছে মূলো, বা এই রকম কিছু ফলাতে পারতেন। তাঁরই কাছে expedition যাত্রা করল। … অনেক অনুসন্ধানে শুধু শাল গাছে কেন, কোনো গাছেই কদলীর অন্বেষণ পেলেন না। অগত্যা ফিরে এলেন।’
বাবু-বিপ্লবীরা হিঁদুয়ানির বিশেষ ভক্ত ছিলেন। তাই যুবা-বিপ্লবীদের মনে অলৌকিকের প্রতি বিশ্বাস জাগানোর চেষ্টা করতেন। ভণ্ড সাধুরাও বাবু-বিপ্লবীদের দুর্বলতার সুযোগ নিতেন। শালগাছের কলা কিম্বা কলাগাছের মূলো ভাগ্যিস পাওয়া যায়নি। পাওয়া গেলে সেই অলৌকিক কলা-মূলো রান্নার নব্য হিন্দু রেসিপি বিপ্লবীদের লিখতে বসতে হত। তবে গুপ্তসমিতির দাপটে দিকে দিকে কালীমূর্তি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। সেই কালীমূর্তির কৃপায় বিপ্লবী যুবাদের মাংসভোগ জুটত।
হেমচন্দ্রের লেখায় সহবিপ্লবী ও নেতাদের কাজকর্ম সম্বন্ধে নানা সমালোচনা চোখে পড়ে। সেই সমালোচনার ভাষায় খাদ্যাখাদ্যের উপমা থেকে থেকেই উঠে আসে। বিপ্লবী যুবাদের কুল-গোত্র নানারকম। অভিজাত যুবারা বিশেষ সুবিধে পেতেন। হেমচন্দ্র লিখেছেন, ‘বারীন এবং আরও দু-তিন জন ঘিয়ে ভাজা কর্মী খ বাবুর সঙ্গে ঐ কেন্দ্রেই থাকত।’ ‘ঘিয়ে ভাজা কর্মী’ অর্থাৎ বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্ত কর্মী– যাকে অরওয়েলের ‘অ্যানিমাল ফার্ম’–এর ভাষায় বলা চলে ‘সাম আর মোর ইকুয়াল’। ‘ঘিয়ে ভাজা কর্মী’ উপমাটি মোক্ষম।
বিপ্লবীদের লেখায় এই সব খাদ্যাখাদ্য বিষয়ক উপমা ও কাণ্ডাকাণ্ড পড়তে পড়তে একটা কথা মনে হয়। রবীন্দ্রনাথ তাঁর নানা লেখায় চরমপন্থী বিপ্লবীদের পথ নিয়ে সমালোচনামূলক মন্তব্য করেছিলেন, সেই সমালোচনা ফেলে দেওয়ার মতো নয়। কৈশোরে গোপন বিপ্লব-সমিতির উত্তেজনা পোহানোর অভিজ্ঞতা রবীন্দ্রনাথেরও ছিল। ‘জীবনস্মৃতি’-তে রঙ্গ করে সে-কথা লিখেছিলেন। সেই গোপন সমিতির নামটিও বড়ো রংদার – ‘হামচূপামূ হাফ’। লিখেছেন, ‘সেই সভায় আমরা এমন একটি খ্যাপামির তপ্ত হাওয়ার মধ্যে ছিলাম যে, অহরহ উৎসাহে যেন আমরা উড়িয়া চলিতাম।’ ফোর্ট উইলিয়ামের একটা পাথরও সেই গুপ্ত সমিতির কাজ-কারবারে খসে পড়েনি। এই খ্যাপামি পরবর্তীকালের বিপ্লবী যুবাদের কাজকর্মে ভর করেছিল। তাঁদের আত্মত্যাগ সত্য, উৎসাহ সত্য আবার পরিকল্পনাহীন অবিবেচনাপ্রসূত খ্যাপামিও সত্য। পরিকল্পনাহীন সেই খ্যাপামনের কৌতুক তাঁদের এই লপ্সি কিম্বা লপ্সিকাবৃত্তান্তে মিলে-মিশে আছে।
*ছবি সৌজন্য: Pinterest, ABP, Sriaurobindoinstitute
বিশ্বজিৎ রায়ের জন্ম ১৯৭৮-এ, কলকাতায়। রামকৃষ্ণ মিশন পুরুলিয়ায় স্কুলজীবন কাটিয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা নিয়ে স্নাতকোত্তর পর্যন্ত পড়াশুনো। উভয় পর্যায়েই প্রথম শ্রেণীতে প্রথম। বর্তমানে বিশ্বভারতীর বাংলা বিভাগে অধ্যাপনা করেন। এবং বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক হিসেবে বাংলা সাহিত্যজগতে সুপরিচিত। রবীন্দ্রনাথ ও বঙ্গসংস্কৃতি বিষয়ে তাঁর প্রকাশিত প্রবন্ধ সংকলনের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘রবীন্দ্রনাথ ও বিবেকানন্দ: স্বদেশে সমকালে’, ‘সচলতার গান’, ‘সব প্রবন্ধ রাজনৈতিক’। এর বাইরে প্রকাশিত হয়েছে তাঁর মুক্তগদ্যের বই ‘ঘটিপুরুষ’, ‘অন্দরবেলা’ ও ‘ইস্কুলগাথা’ এবং পদ্যের বই ‘বিচ্ছেদ প্রস্তাব’ ও ‘গেরস্থালির পদ্য’। ‘ঘটিপুরুষ’ গ্রন্থের জন্য পেয়েছেন নীলাঞ্জনা সেন স্মৃতি পুরস্কার।
আমি (৭৭+) বাল্যকালে মাতামহ, অধুনাবিস্মৃত বিপ্লবী-সাহিত্যিক-সাংবাদিক বলাই দেশর্মার বর্ধমানের বাসায় বারীন ঘোষের (এবং নজরুল সহ আরো অনেকেরই) স্নেহ এবং আদর পেয়েছি। “ঘিয়ে ভাজা” বিপ্লবী বারীন ঘোষের শেষ জীবনের চরম দারিদ্র্যের কথা কি এই প্রথিতযশা লেখকের জানা আছে?
যাই হোক, সম্ভব হলে আকাদেমী পত্রিকা-১৭ এবং বারীন্দ্রকুমার ঘোষের “অগ্নিযুগ” (১ম খন্ড)-টি তিনি দেখতে পারেন।
বিস্মৃত বিপ্লবীদের নিয়ে অধ্যাপক মহাশয়ের সরস লেখাটি পড়ে মনটা খারাপ হয়ে গেলো।
মান্যবরেষু,
অগ্নিযুগের বিপ্লবীদের অসম্মান করা আমার উদ্দেশ্য নয়। আমি তো সহবিপ্লবীর লিখিত বয়ান ব্যবহার করেছি। সেখানেই আছে এই শব্দবন্ধ। সময় ও ইতিহাস নির্মম, খুব নির্মম।
অগ্নিযুগ আমি পড়েছি। বস্তুতপক্ষে বিপ্লবীদের স্মৃতিকথা ও সমকালীন বিপ্লব সম্বন্ধীয় রচনা যতটা সম্ভব সংগ্রহ করেছি।