সেপ্টেম্বরের এগারো তারিখ। মার্কিনি কেতায় বলে নয়-এগারো। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তো বটেই, সমাজ-সভ্যতার ইতিহাসেও তারিখটি এক গুরুত্বপূর্ণ সন্ত্রাস-সময়-স্মারক। উপনিবেশের সময় থেকে শুরু করে গৃহযুদ্ধের কাল হয়ে স্বাধীনতার লড়াই অথবা তারপরেও মার্কিন ভূমিতে এমন ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটেনি। ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর জঙ্গিবিমানের হামলায় হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গর্ব, নিউ ইয়র্কের টুইন টাওয়ার ‘ওয়র্ল্ড ট্রেড সেন্টার’। বিধ্বস্ত হয় দেশের প্রতিরক্ষা বিভাগের সদর দপ্তর পেন্টাগন।
একবিংশ শতাব্দীর সূচনালগ্নের এই জঙ্গি হামলার অভিঘাত যে কত সুদূরপ্রসারী হতে পারে, তা বোধহয় কেউই অনুমান করতে পারেনি। হামলাকারীরাও আন্দাজ করতে পারেনি, যে এর ফলে হারিয়ে যেতে পারে সাগরপারের ঐতিহাসিক সভ্যতার যাবতীয় নিদর্শন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষজ্ঞরাও বোধ হয় বিশ্লেষণ করে দেখেননি যে এক এক করে একটানা দুই দশক ধরে নয়-এগারোর জন্য মূল্য চোকাতে হতে পারে।
নয়-এগারোরর হামলার পর বিশ্ব রাজনীতি ও প্রশাসনের বহুক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। এই প্রথম বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ২০০১-এর অক্টোবর মাসেই আফগানিস্তানে হামলা চালায় মার্কিন সেনাবাহিনী। আফগানিস্তান যুদ্ধের মাধ্যমে নিজেদের ইতিহাসে দীর্ঘতম যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তাকে সহযোগিতা করে ইউরোপীয় সামরিক জোট ন্যাটো। সে সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাধারণ মানুষও এই আক্রমণকে সমর্থন করে। আফগানিস্তানের পর ইরাক, লিবিয়া, সিরিয়া-সহ বিভিন্ন জায়গায় সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সামরিক শক্তি প্রয়োগ করেছে মার্কিন প্রশাসন।

এইসব আগ্রাসী আক্রমণ কত মানুষের প্রাণ ছিনিয়ে নিয়েছে, কতজনকে সারাজীবনের জন্য পঙ্গু করে দিয়েছে, ভেঙেছে কত ঘর-সংসার, দেশান্তরী হয়ে শরণার্থীর জীবনযাপন করতে হচ্ছে কতজনকে, ইত্যাদি হিসেব কষতে হয়তো আরও কুড়ি বছর পার হয়ে যাবে। হয়তো প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে চলতে থাকবে এই হামলার ক্ষয়ক্ষতির খতিয়ান নির্মাণ।
নয়-এগারোর ঘটনার পর অসামরিক বিমান পরিবহন ব্যবস্থায় বিরাট পরিবর্তন করতে হয়েছে। আল-কায়দার ১৯জন হামলাকারী ভারী অস্ত্র নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যিক ফ্লাইটে চড়ে বসতে পেরেছিল। এমনকী তারা প্লেনের ককপিটে ঢুকে ফ্লাইটের গতিপথ বদলানোর মতো কাজটিও করতে সক্ষম হয়েছিল। এতে প্রমাণিত হয়, যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবন্দরের নিরাপত্তাব্যবস্থা কতটা নড়বড়ে ছিল। বিমানবন্দরে নিরাপত্তা ও সংকট কাটাতে ২০০১-এ মার্কিন কংগ্রেসের অনুমোদন নিয়ে চালু হয় ট্রান্সপোর্টেশন সিকিউরিটি অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (টিএসএ) নামে একটি স্বাধীন সংস্থা। এক বছরের মধ্যে এই সংস্থায় ৫০ হাজার কর্মী নিয়োগ করা হয়।
বিমানবন্দরে আগে যে স্ক্যানার মেশিন বসানো ছিল, তা শুধু ধাতব দ্রব্য শনাক্ত করতে পারত। এখনকার স্ক্যানারগুলো খুঁটিনাটি সব ধরে ফেলতে সক্ষম। টিএসএ-র কর্মীরা এখন যাত্রীদের আচরণেও ব্যাপক নজরদারি চালিয়ে থাকেন। এ ছাড়া তাঁদের হাতে রয়েছে পাঁচ শতাধিক আমেরিকান-সহ প্রায় ছ’হাজার জনের ‘নো-ফ্লাই’ তালিকা। অর্থাৎ সন্ত্রাসবাদী সন্দেহে যাদের নাম নথিভুক্ত রয়েছে।
নয়-এগারোর হামলার মাত্র ছ’সপ্তাহের মাথায় যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে গৃহীত হয় ‘দেশপ্রেম আইন’। এফবিআই-এর মতো গোয়েন্দা সংস্থার কার্যক্রমের সীমারেখা প্রসারিত হয়। এই আইনের বলে জাতীয় নিরাপত্তার নামে এবং মার্কিনিদের নিরাপত্তার স্বার্থে যে কোনও ব্যক্তিকে তল্লাশি করা যায় এবং তার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা যায়। যে কোন সময় আবারও নয়-এগারোর হামলার মতো ঘটনা ঘটতে পারে, এমন ভয় থেকে গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই ও এনএসএ-কে বাড়তি ক্ষমতা দেয় কংগ্রেস। এই আইনের ফলে আদালতের নামমাত্র অনুমতিতে যে কোনও ব্যক্তির লাইব্রেরি রেকর্ড ও ইন্টারনেট-সার্চ সংক্রান্ত তথ্য দেখতে পারে এফবিআই ও এনএসএ। গোয়েন্দারা আগাম নোটিস ছাড়াই কারো বাড়িঘর তল্লাশি কিংবা উপযুক্ত কারণ ছাড়াই ফোনে আড়ি পাততে পারে।

২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের সকাল। প্রতিদিনের মতোই জেগে উঠেছিল কর্মব্যস্ত নিউ ইয়র্ক শহর। সে দিনের সকালের সঙ্গে অন্যদিনের সকালের কোনও পার্থক্য ছিল না। স্থানীয় সময় তখন ৮টা ৪৬ মিনিট। হঠাৎ করেই ঘটল সেই বীভৎস ঘটনা। মুহূর্তেই পাল্টে গেল দৃশ্যপট। সারা বিশ্ব টেলিভিশনের পর্দায় অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে দেখল সন্ত্রাসের আগুনে কীভাবে জ্বলেপুড়ে শেষ হতে লাগল আমেরিকার ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার। ‘টুইন টাওয়ার’ হিসেবে পরিচিত বিশ্বের অন্যতম উঁচু ইমারতে আঘাত হানে সন্ত্রাসীদের দখল করা দুটি যাত্রীবাহী বিমান। কয়েক মিনিটের ব্যবধানে বিমান হামলার এমন ধ্বংসযজ্ঞ বিশ্ববাসীর কল্পনারও বাইরে।
মুহূর্তের মধ্যেই নিউ ইয়র্কের নীল আকাশে ছড়িয়ে পড়ে নিকষ কালো ধোঁয়া। সবার চোখের সামনে মুখ থুবড়ে পড়ে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক গৌরবের প্রতীক ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার। শুধু তাই নয়, যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক গৌরবের প্রতীক ওয়াশিংটনের পেন্টাগন ভবনেও হামলা চালায় আর একটি বিমান। এছাড়া পেনসিলভানিয়ায় আর একটি বিমান দিয়ে হামলার চেষ্টা ব্যর্থ হয়।
কীভাবে ঘটেছিল এই ভয়াবহ তাণ্ডব? ১১ সেপ্টেম্বরের সেই ভয়ঙ্কর সকালে আল-কায়দার উনিশ জঙ্গি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চারটি যাত্রীবাহী বিমান প্রায় একই সময়ে হাইজ্যাক করে। এর মধ্যে দু’টি বিমান দিয়ে তারা নিউইয়র্ক শহরের টুইন টাওয়ারে হামলা চালায়। এতে বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্রে আগুন ধরে যায়। মাত্র দু’ ঘণ্টার মধ্যে টুইন টাওয়ার ধসে পড়ে। পাশের বেশকয়েকটি বাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ দু’টি ফ্লাইটের ধ্বংসযজ্ঞ চলাকালীনই তৃতীয় ফ্লাইটটি দিয়ে জঙ্গিরা যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা সদর দফতর পেন্টাগনে আঘাত হানে।
চতুর্থ ফ্লাইটটি নিয়ে জঙ্গিরা পেনসিলভানিয়া রাজ্যের শাংকসভ্যালি এলাকায় চলে যায়। তাদের লক্ষ্যবস্তু ছিল যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি-র ক্যাপিটল ভবন অথবা হোয়াইট হাউসে আঘাত হানা। এ সময় কিছু যাত্রী ও ফ্লাইটের ক্রু বিমানটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার জন্য জঙ্গিদের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়ে। ফলে বিমানটি আকাশেই বিধ্বস্ত হয়ে শাংকসভ্যালি এলাকায় ভূপতিত হয়। ওই বিমানের কেউ বাঁচেননি। তবে আর একটি ভয়াবহ হত্যালীলা এড়ানো যায়।

টুইন টাওয়ার ও তার আশপাশে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনে ২৭৪৯ জন প্রাণ হারান। নিহতদের বেশিরভাগই অসামরিক নাগরিক। নিহতদের মধ্যে আরও ছিলেন ৩৪৩ জন দমকলকর্মী ও ৬০ জন পুলিশ। পেন্টাগনে আত্মঘাতী বিমান হামলায় মোট ১৮৪ জন নিহত হন। সবমিলিয়ে সেদিনের হামলায় ৭০টি দেশের মার্কিন প্রবাসীরা নিহত হয়েছিলেন। তাৎক্ষণিক মৃত্যুই শেষ কথা নয়, উদ্ধারকাজ চালাতে গিয়ে যারা আহত, অসুস্থ এবং বিষক্রিয়ার শিকার হয়েছিলেন তাদের মধ্যে ৮৩৬ জনের পরে মৃত্যু হয়।
এই একটি ঘটনা পাল্টে দেয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামাজিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতি। ধুলোয় মিশে যায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অহঙ্কার। একই সঙ্গে বোঝা যায়, কট্টর ধর্মীয় মৌলবাদের নৃশংসতার মাত্রা কত বীভৎস হতে পারে। ২০০১-র ১১ সেপ্টেম্বরের জঙ্গিহানার পর থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ঋণের খাতায় যোগ হয়েছে প্রায় ৪০০ কোটি ডলার। মূলত জাতীয় নিরাপত্তার জন্য এসব অর্থ ব্যয় করা হয়েছে। নয়-এগারোর হামলার বদলা নেওয়ার জন্য বিভিন্ন দেশে কমপক্ষে ২,৩৬,৫০০ মানুষ নিহত হয়েছেন, যাঁদের অধিকাংশই অসামরিক নাগরিক। রোড আইল্যান্ডের ব্রাউন ইউনিভার্সিটির ওয়াটসন ইনস্টিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ়ের ‘কস্ট অফ ওয়ার’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। নয়-এগারোর হামলায় মোট আর্থিক ক্ষতি ৫ থেকে ১০ হাজার কোটি ডলার।
শুধু যুক্তরাষ্ট্রই নয়, এর প্রভাব পড়ে সারা বিশ্বে। এজন্য মাসুল গুনতে হয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কয়েকটি দেশকে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চাপিয়ে দেওয়া সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধে ইরাক, আফগানিস্তানকে দিতে হয়েছে চড়া মূল্য। নয়-এগারোর এই নৃশংস ঘটনার পর রাতারাতি পাল্টে যায় বিশ্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতেই সামরিক অভিযান চালানো হয়েছে আফগানিস্তান ও ইরাকে। আক্রান্ত হয়েছে লিবিয়া, সিরিয়া। দামাস্কাস, ত্রিপোলির মতো ঐতিহাসিক শহরের যাবতীয় ঐতিহ্যবাহী নিদর্শন গুঁড়িয়ে গেছে। ভেঙেছে কত সংসার-সংস্থা। কত মানুষ দেশান্তরী হয়েছে অথবা দেশের মধ্যেই বাস্তুহারা হয়েছে, তার হিসেব এখনও কষা হয়নি। আর্থ-সামাজিক নিরাপত্তা হারিয়ে দেশগুলি এখন দান খয়রাতির ভরসায় কোনওরকমে বেঁচে আছে অথবা বলা ভালো টিঁকে আছে।
আল কায়দা গোষ্ঠীর ছিনতাইকারী ছিল মোট ১৯ জন। এদের মধ্যে তিনটি দলে ছিল পাঁচজন করে, যারা বিমান হামলা চালায় টুইন টাওয়ার ও পেন্টাগনে। আর যে বিমানটি পেনসিলভেনিয়ায় ভেঙে পড়ে, তাতে ছিনতাইকারী দলে ছিল চারজন। প্রত্যেক দলের একজন ছিনতাইকারীর বিমানচালনার প্রশিক্ষণ ছিল। তারা পাইলটের প্রশিক্ষণ নিয়েছিল খোদ আমেরিকার ফ্লাইং স্কুলে।

কট্টর ধর্মীয় মৌলবাদীদের সংগঠন আল-কায়দা আফগানিস্তান থেকে এই হামলার পরিকল্পনা করেছিল বলে হামলার এক মাসের মধ্যেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডাব্লিউ বুশ আফগানিস্তান আক্রমণ করেন। তারপর আরও তিনজন প্রেসিডেন্ট ক্ষমতাসীন হয়েছেন। আল-কায়দাকে নিশ্চিহ্ন করতে এবং জঙ্গি নেতা ওসামা বিন লাদেনকে খুঁজে বের করতে আমেরিকার নেতৃত্বাধীন এই অভিযানে যোগ দেয় আন্তর্জাতিক মিত্রজোট ন্যাটো।
যুদ্ধ শুরুর দশ বছর পর ২০১১ সালে মার্কিন সৈন্যরা অবশেষে ওসামা বিন লাদেনকে পাকিস্তানে খুঁজে পায় এবং হত্যা করে। নয়-এগারোর হামলার অভিযুক্ত পরিকল্পনাকারী, খালিদ শেখ মোহাম্মদকে ২০০৩-এ পাকিস্তান থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। গুয়ান্তানামো বে’র বন্দীশিবিরে আমেরিকার তত্ত্বাবধানে আপাততঃ খালিদ শেখ মোহাম্মদকে বিচারের অপেক্ষায় বন্দিজীবন কাটাতে হচ্ছে। আল-কায়দা এখনও জীবিত আছে। আফ্রিকায় সাহারা মরুভূমির দক্ষিণের দেশগুলোতে আল-কায়দা যথেষ্ট ক্ষমতাশালী। এমনকি আফগানিস্তানের ভেতরে এখনও আল-কায়দা সক্রিয় বলে শোনা যায়।
নিউইয়র্কে হামলার স্থান, যেখানে টুইন টাওয়ার বিধ্বস্ত হয়েছিল, সেই “গ্রাউন্ড জিরো”র ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কার করতে আট মাসেরও বেশি সময় লেগেছিল। ওখানে এখন তৈরি হয়েছে একটি স্মৃতিসৌধ। আকাশছোঁয়া বাড়িগুলো আবার নির্মিত হয়েছে, তবে ভিন্ন নকশায়। সেখানে মধ্যমণি হিসাবে নির্মিত হয়েছে ওয়ান ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার বা ‘ফ্রিডম টাওয়ার’।
নয়-এগারোর হামলা একইসঙ্গে প্রমাণ করে কট্টর ধর্মীয় মৌলবাদের সঙ্গে আগ্রাসী আক্রমণের দ্বন্দ্বে ভেঙে যায় সমাজ-সভ্যতা। হারিয়ে যায় ইতিহাস। চূড়ান্ত বিচারে এই দ্বন্দ্বের অবসান হয় না।
পরিশিষ্ট : প্রচারের আলোয় ২০০১-এর নয়-এগারোর হামলা এবং পরবর্তী পদক্ষেপ এখন বিশ্ব ইতিহাসের একটি পরিচিত অধ্যায়। অথচ ১৯৭৩ সালের ১১ সেপ্টেম্বর রয়ে যায় অনালোচিত-অনালোকিত। দক্ষিণ আমেরিকার দক্ষিণতম প্রান্তের শান্ত দেশ চিলে-র রাষ্ট্রপতিকে ১৯৭৩-এর ১১ সেপ্টেম্বর সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত করে হত্যা করা হয়। গণতান্ত্রিক দেশের নির্বাচিত রাষ্ট্রপতিকে হত্যা করে চিলে-তে জারি হয় সামরিক স্বৈরাচার।
সেই স্বৈরাচারী শাসনের কথা বিশ্ববাসীকে জানিয়েছেন গাবরিয়েল গার্সিয়া মার্কেস্। ১৯৮২-তে নোবেল পুরস্কার গ্রহণ উপলক্ষে দেওয়া ভাষণে তিনি বলেন, –
“…চিলে-র কবি পাবলো নেরুদা এই মঞ্চ থেকে নোবেল পুরস্কার নেওয়ার পর লাতিন আমেরিকায় পাঁচটা যুদ্ধ ও সতেরোটা সামরিক অভ্যুত্থান ঘটে গেছে। ঘটেছে এক পৈশাচিক একনায়কের উত্থান, যে ঈশ্বরের নামে আমাদের যুগে গণহত্যার অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।…”
*ছবি সৌজন্য: DW, WBCE, Reuters, Wionews
প্রশিক্ষিত প্রযুক্তিবিদ ও পরিচিত পরিকল্পনাবিশারদ। পড়াশোনা ও পেশাগত কারণে দেশে-বিদেশে বিস্তর ভ্রমণের অভিজ্ঞতা। তার ফসল বেশ কয়েকটি জনপ্রিয় বই। জোয়াই, আহোম রাজের খোঁজে, প্রতিবেশীর প্রাঙ্গণে, কাবুলনামা, বিলিতি বৃত্তান্ত ইত্যাদি।