মৃত্যুঞ্জয়: কিন্তু সুজয়, আমি সত্যিই এই মুহূর্তে কিছু খরচ করতে পারব না। ভেবেছিলাম, শ্যামলীর বিয়ে ঠিক হলে বাড়ির একটা অংশ বেচে কিছু টাকা তুলব। কিন্তু তোমার কথা যদি সত্যি হয়, সেই সময়ও তো হাতে নেই।
শ্যামলী: বাড়ি বিক্রি টিক্রির কোনও প্রয়োজন নেই। এমনি বিয়ে করতে হলে করবে, নাহলে ফোট! বিয়ে না করলেও আমার চলে যাবে।
মানসী: মিত্তিররা বলেছে মেয়ে পছন্দ হলে ওরা একপয়সাও নেবে না। বিয়ের সব খরচ ওদের। ছেলে নাকি কড়া ভাষায় জানিয়ে দিয়েছে।
শ্যামলী: মিত্তির? মিত্তির কে?
মৃত্যুঞ্জয়: এই যা! বলে ফেললে?
(মানসী উসখুস করে। সুজয় ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে তাকিয়ে থাকে)
মানসী: আমি যাই রান্না চাপাতে হবে।
শ্যামলী: কোথাও যাবে না। বল, মিত্তির কে?
মানসী: মিত্তির, মানে তোর শান্তি কাকিমার দেওর – নামটা আমার মনে নেই। (মৃত্যুঞ্জয় কে) আঃ তুমি বল না।
মৃত্যুঞ্জয়: সুশান্ত – সুশান্ত মিত্র –
মানসী: ওর ছেলে আমেরিকায় থাকে। নিজের কোম্পানি, বিশাল রোজগার, বাড়ি গাড়ি, কী নেই। গত সপ্তাহে দেশে এসেছে। আজ তোকে – দেখতে আসবে।
শ্যামলী: দেখতে আসবে? তার মানে? আমি কি সিনেমা নাকি যে আমাকে দেখতে আসবে?
মানসী: না না, সেরকম দেখতে আসা নয়। ওরা এমনি আসবে, গল্প স্বল্প করবে। তোকে সাজতে গুজতে হবে না, মিষ্টি দিতে হবে না – ওরা পরিষ্কার বলে দিয়েছে – মেয়ে যেন জানতে না পারে আমরা দেখতে আসছি।
সুজয়: মাসিমা আপনি এটা করতে পারলেন? মেসোমশাই, এটা কী হল? এমন তো কথা ছিল না। আমেরিকার বড়লোক ছেলে পেয়ে আমাকে ভুলে গেলেন? আমি এতদিন ধরে আপনাদের কাছে আসছি, আপনাদের সুখে দুঃখে – আর সেই আমাকে আপনারা এভাবে অবহেলা করলেন?