‘একটা সুসংবাদ দাও’

‘একটা সুসংবাদ দাও।’ আমি চুপ করে যাই।
এত সুসংবাদ আমি কোথা থেকে পাব অলোকদা?

আমার দু’পাশে
আমি তো শুধুই দেখছি ধ্বংসস্তূপ, মানুষের বুকের উপর
মানুষেরই লাশ শুয়ে আছে।

‘তুমি বুঝি ওটুকুই দেখো? আমি তো সুন্দরটুকু খুঁজে নিই,-
দুইটি চুম্বনরত লাশ তুমি পাওনি কি খুঁজে?
দেখনি, মায়ের কোলে মাথা রেখে সবুজ শিশুকে?
আমাকে জানিও তুমি সুখবর, আসছে রবিবার।’

ততদিনে সূর্য আরও বয়স্ক শীতল হয় যদি?
যদি আরও পাড় ভাঙে? যদি আরও আরও
বিমানবাহিনী ফেলে যায় বোমা কলোনিশিবিরে?
নদী শুকনো হয়ে যায়, জল বাড়ে বিপদসীমায়
গাছের সমাধি থেকে পারমাণবিক ভস্ম ওড়ে?

‘তুমি বুঝি ওটুকুই দেখ?

মানুষ চোখের জল আজও ফেলে, তা কি নয়
আশাবাদ কোনও?’

একটি সুসংবাদ আছে ঠিক, অন্ধকারে রাখা,-
তুমি তার সঙ্গে দেখা করে এস, দু’জনে ভীষণ
কাছাকাছি থেকো।
একে অপরের হাতে রেখে দিও জোনাকি আমার।
আমাকে খবর দিও, দূরভাষে, ধ্বংসস্তূপেও
কে এল সায়গল হলে যেভাবে গাইতেন সেই গান!

একটি সুসংবাদ দিও তুমি, ভোরবেলার মতো।

ভোরবেলায় ফোন এল, আর কোনও ফোন তাঁর
      কখনও আসবে না।




যৌবনবাউল-এর কবিকে 

জড়িয়ে আছে অন্ধকার
তোমার মতো শূন্যতায়
শুধু দূরের সন্ধে নেমে আসে

রাস্তাগুলো সরীসৃপ
কে কার কাছে ফিরতে চায়
আমার কোনও তেমন ঘর নেই

একটি মাত্র জন্ম যার
ফুঁপিয়ে কাঁদে মধ্যরাত
কার কাছে যে স্বপ্ন লেখা শিখি

মানুষ বড় গরিব, তাই
আঁকড়ে ধরে বাঁচতে চায়
থাকে না কেউ, আতিথেয়তা বাকি

জীবন চলে অসংযত
দুঃখ যেন গঙ্গাজল
প্রবাহে আমি ভুলিয়ে তাকে রাখি

Hindol Bhattacharjee হিন্দোল

হিন্দোল ভট্টাচার্যের কবিতা লেখার শুরু নয়ের দশকে। কবি ও লেখক হিসেবে পরিচিতি ও জনপ্রিয়তা দুইই পেয়েছেন বাংলা ভাষার পাঠকদের কাছে। মোংপো লামার গল্প, সব গল্প কাল্পনিক, রুদ্রবীণা বাজো, বিপন্ন বিস্ময়গুলি, এসো ছুঁয়ে থাকি এই লেখকের কিছু পূর্বপ্রকাশিত বই।

2 Responses

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *