‘…ভৈরোঁ যেন ভোরবেলার আকাশেরই প্রথম জাগরণ; পরজ যেন অবসন্ন রাত্রিশেষের নিদ্রাবিহ্বলতা, কানাড়া যেন ঘনান্ধকারে অভিসারিকা নিশিথিনীর পথবিস্মৃতি, ভৈরবী যেন সঙ্গিবিহীন অসীমের চিরবিরহবেদনা, মূলতান যেন রৌদ্রতপ্ত দিনান্তের ক্লান্তিনিশ্বাস, পূরবী যেন শূন্যগৃহচারিণী বিধবা সন্ধ্যার অশ্রুমোচন।….’
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, সঙ্গীতের মুক্তি, সবুজ পত্র, ভাদ্র ১৩২৪
১
আমি তো মায়ের কুলাঙ্গার ছেলে। ‘মা’ বলতে কড়ি মা বুঝি। বেশ একটু বড় হয়ে, ইমন রাগ শিখছি তখন। কল্যাণ ঠাট। বেহালার তারে সে রাগ তুলতে গিয়ে যেই না কড়ি মা লাগিয়েছি, ছেলেবেলার সেই ডাক, ফিরে এল কানে। সন্ধেবেলা, খেলার মাঠ থেকে ফিরে, আধো আলো আধো অন্ধকারে, কলতলায় হাত-মুখ ধুচ্ছি, আর চিৎকার করে বলছি, মাআআআআআআআআ….. খেতে দাও খিদে পেয়েছেএএএ। সেই তীব্র মা। আমার স্কেলটা মিলে গেল ন্যাচরাল সি-তে। আর কী আশ্চর্য, এটাও সন্ধের রাগ। তারও কত পরে লিখেছি, ইমন ধুয়ে গেছে মায়ের কল্যাণে। আরেকটি রাগ হল, শ্রী। পূরবী ঠাট থেকে এসেছে। সূর্যাস্তের সময় গাওয়া হয় শ্রী। রাগচন্দ্রিকাসার বলছে—
কোমল রিধ তীবর নিগম পরিসমবাদীবাদি।
ধগ বরজে আরোহি মেঁ ইয়হ শ্রীরাগ অনাদি।।
তীব্র মা, এখানেও। সেই সন্ধে। সূর্যাস্ত। ঘটাং ঘট ঘটাং ঘট করে আমি টিউকল পাম্প করছি, আর হড়হড় করে জল নেমে আসছে, ধুয়ে ফেলছি হাঁটুতে, পায়ের পাতায়, আঙুলে, হাতে, লেগে থাকা ধুলো কাদা। আর সন্ধে নামছে। আস্তে আস্তে কালো হয়ে আসছে মাঠ। দূরের বাড়িগুলো আরও আবছা হয়ে যাচ্ছে। শাঁখে ফুঁ দিচ্ছে মা। চৌকাঠে দিচ্ছে জল ছিটিয়ে। শুধু অনুভূতির সঙ্গে নয়, প্রকৃতির সঙ্গে আমাদের রাগগুলো জড়িয়ে।
রবীন্দ্রনাথ বলেছেন, ‘কোন রাতের পাখি গায় একাকী সঙ্গিবিহীন অন্ধকারে’, সঙ্গিবিহীনটা কে, পাখি না অন্ধকার, বলে যাননি তিনি। আবার ধরো, ‘আমায় কেন বসিয়ে রাখো একা দ্বারের মাঝে’, আমি না দুয়ার, কে একা বলা নেই কোত্থাও। আমাদের রাগসঙ্গীতগুলো প্রকৃতির বিভিন্ন ভাবের সঙ্গে নিজেকে মেলাতে মেলাতে চলে। আমরা যত প্রকৃতিসংলগ্ন থাকব, আমাদের মন যত প্রকৃতির কাছাকাছি থাকবে, রাগসঙ্গীতও তত আমাদের নিকটের থাকবে। আশ্রয় হয়ে উঠবে।
আমার নিজের মনে হয়, লেখক শিল্পীদের রাগসঙ্গীত খুব ভালো ভাবে শোনা বা পারলে শেখা উচিত। যেমন, একদম টানটান বাঁধা তারে কোনও স্বরচ্যুতি না ঘটিয়ে মূল কথাটা একেবারে সোজা বলে ফেলতে হয় কীভাবে, মারোয়া রাগ খুব ভালো করে দেখায়। এটাই একমাত্র রাগ যেখানে কোনও মীড়ের কাজ নেই। প্রত্যেকটা নোট একেবারে সোজা খাড়া এসে নামে। যেন গ্রীষ্মের দুপুর ১২ টার রোদ সোজা এসে পড়ছে মাথায়। অন্য বা পাশের স্বরকে ছুঁয়ে এলিয়ে বা গড়িয়ে নামবার কোনও ব্যাপারই সেখানে নেই। মীড় দেওয়ার সময় একজন শিল্পী টার্গেট-নোটে যাওয়ার জন্য অনেকটা সময় ও সুযোগ পান। ধরা যাক, আমি কোমল রে লাগাব। আমি যদি শুদ্ধ গা-এর ওপর থেকে মীড় টেনে আনি, তাতে ছোট্ট স্রোতের মতো একটা গড়ানো সুর যেমন আসবে, তেমনি গা থেকে (কোমল) রে-তে আসবার একটা সহজ রাস্তাও আমি পাব। কিন্তু যদি কোনও মীড় ছাড়াই, সোজা, একবারে আমাকে কোমল রে বা শুদ্ধ রে লাগাতে হয়, সেটা কিন্তু ওয়ান শট গেম। ভুল হলে একেবারে ভুল। ওটাকে শুধরে নেওয়ার আর কোনও সুযোগ নেই। এরকম কঠিন একটা রাগ মারোয়া। বহু জাঁদরেল শিল্পীও একে সমঝে চলেন। আমার মনে হয়এগুলো একেকটা ভাষাশিক্ষা।
এবারে ধরা যাক, আপনি একটা গল্পে অন্য কারুর কোনও লেখার ইঙ্গিত বা বাক্যাংশের বা শব্দের ইশারা টেনে আনলেন। লেখার মতো করেই আনলেন। সমালোচক, তার্কিক একে কী বলবে সবাই জানি। আমি কিন্তু বলব মীড়। কালের মীড় হয়, সময়ের মীড় হয়। মীড় তো আর কিছুই নয়, একটা ইতিহাসের সূত্র বা রেফারেন্স থেকে আরেকটায় এলিগ্যান্টলি আসা ছাড়া।
সংস্কৃতি মানেই মীড়ের কাজ। মীড় কী, বুঝতে, ধ্রুপদী সঙ্গীত সম্পর্কে একটু ধারণা থাকলে, সুবিধে। মার্ক্সেরই কথা এটা, সংস্কৃতি সমাপ্তিহীন এক রেখায় এগিয়ে চলে। সংস্কৃতি মানে তা পূর্ববর্তী সংস্কৃতিরও কিছুটা পুনরাবৃত্তি। সংস্কৃতি শুধু সঙ্গীত নয়, সাহিত্য নয়, চিত্রকলা নয়, শরীরের অলঙ্কারও সংস্কৃতি। ইনফ্যাক্ট শরীর নিজেই একটা সংস্কৃতি। ফলে একজনের সঙ্গে আরেকজনের, এক কালের সঙ্গে আরেক কালের সমাপ্তিহীন রেখায় সংলাপটা অনিবার্য। জরুরি।
২
বাঘাযতীন পার্কের সামনে ফুটপাথে বসে বেহালা বাজাচ্ছিলাম। মাথার পাগড়িটা খুলে উলটো করে মাটিতে রাখা। বাজাচ্ছিলাম দরবার-ই-কানাড়া। আস্তে আস্তে জটলা বাড়ছিল। শীতের সন্ধে। এরকম সময় সবাই জড়ো হয়েই থাকতে ভালোবাসে। বাজাতে বাজাতে আমার কী খেয়াল হল, দরবারির সা ধা নি (কোমল) পা মা পা গা (কোমল) এই অবধি বাজিয়ে মা (তীব্র) রে সা নি র সা নি রে গা রে গা পা মা (তীব্র) গা রে সা নি রে সা, এইভাবে ইমনে চলে গেলাম। ধ্রুপদী রাগের দিক থেকে এ অশুদ্ধ। কিন্তু জগতে মানবজীনে এরকম তো হয়। ধরুন আপনি কাউকে ভালোবাসেন। আপনি জানেন যে সেও বাসে, আপনাকে। তারপর একদিন দুম করে সে সব ছেড়েছুড়ে ‘চললাম’ বলে অন্য পথ ধরে নিল।
ফেরার পথে মোড়ে আরও কয়েকজন ধরল, বাজিয়ে শোনান। একটা বাইকের ওপর বসে বাজালাম। কেন চেনা গান না বাজিয়ে রাস্তায় ক্লাসিকাল বাজাচ্ছি, তাও জিজ্ঞেস করল। আমার মতো করে বললাম। আরও একটা বাজাতে বলল। বাজালাম। সন্ধেবেলা প্রচণ্ড অ্যাংজাইটি অ্যাটাক হচ্ছিল বলে রাতের ওষুধগুলো সন্ধেতেই খেয়ে নিয়েছি। তাই ততক্ষণে আমার জিভ জড়াতে শুরু করেছে। এদিকে ওরা আরও বাজনা শুনবে। ওদের কাছ থেকে একটা সিগারেট নিয়ে টানতে টানতে ফ্ল্যাটে ফিরলাম। ওষুধের জেরে তখন টলছি। কিন্ত মাথায় ঘুরছে, অবরোহে দরবারির কোমল নি-টা ঠিকমতো লাগেনি। হারানো প্রেমের ব্যথার মতো খচখচ করে ওই ব্যর্থ কোমল নিষাদ।
৩
৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় একটি বিশেষ জায়গায় বেহালা বাজানোর ছিল। ধ্রুপদী সংগীতে ঘরানা ভিত্তিক চর্চা আমরা ইতিমধ্যে ছাড়িয়ে এসেছি। ধরুন ইমন রাগ বাজাচ্ছি। কল্যাণ ঠাট। বাজাতে বাজাতে হঠাৎ চলে গেলাম ঘর সে নিকল তে হি গানে। সেখান থেকে দরবারি হয়ে সোজা সোহিনীতে ঢুকে পড়লাম। তারসপ্তকে সোহিনী যখন চড়ায় বাজছে, হঠাৎ উঠল ঝড়। বেহালার ছড়ে তখন ঝড়ের লেজ ঝাপটানো। আস্তে আস্তে ঝড় কমলে নরম হয়ে আসছে সুর। ঋষভ আর ধৈবত কোমল করে বাজছে ভৈরব। একই রাগে দীর্ঘক্ষণ থেমে না থেকে মানবমন ও মানবজীবনের মতোই এ রাগ থেকে সে রাগে যাতায়াত স্বরের সুড়ঙ্গ ধরে ধরে। এখন এরকমই বাজাই।
কিন্তু স্টেজ ছেড়ে, অডিটোরিয়াম ছেড়ে রাস্তায় কেন? দেখবেন, কিছু শিল্পকে বাছাই করা দর্শক ও শ্রোতার মধ্যে বন্ধ করে বন্দি করে রাখা হয়েছে, যার পরিমণ্ডলে যেন দুর্গের দেয়াল, চারধারে পরিখা প্রাচীর। সবার সেখানে প্রবেশাধিকার থাকে না। দামি টিকিট কেটে উচ্চমার্গের শিক্ষা নিয়ে সেখানে ঢুকতে হয়। এই এলিটিয়ানার দুর্গে রাখা হয়েছে মার্গ বা ধ্রুপদী সঙ্গীতকে। আমি সেই প্রেমিক রাখাল যে দুর্গের ভেতর থেকে বন্দিনী রাজকুমারীকে নিয়ে পালাব বলে এসেছি। তাকে নিয়ে নামব রাস্তায়। তাকে নিয়ে উঠে পড়ব চলন্ত ট্রেনে। তাকে নিয়ে বসে থাকব বাস স্টপে। আর লোকে দেখবে, আমার দু’ হাতে বসন খুলে বাজছে শেকলকাটা বন্দিনী। দুর্গেশনন্দিনী।
৪
ঘর অন্ধকার। ডাবল বেডে একা। সন্দীপনের উপন্যাসের নাম। একলা বেডে ডাবল, এই নামে কিছু লিখব। জ্বরে কাঁপছি। অথচ জ্বর নেই। গা পুড়ে যাচ্ছে না। অথচ কাঁপছি। সকাল থেকে অ্যাংজাইটি অ্যাটাক। বিছানাজুড়ে ছড়িয়ে হেনরি মিলারের উপন্যাস, আমার অনুবাদের পাণ্ডুলিপি, প্রকাশিতব্য গল্পের বইয়ের পাণ্ডুলিপি, একগাদা বিভিন্ন মাপের নোটবুক, পেন, অ্যাশট্রে, জলের বোতল, চার্জার, ট্যাবের অ্যাডাপ্টার, ইয়ারফোন, গুচ্ছের ওষুধ, আগা শহিদ আলির কবিতার বই, আমার নতুন নাটকের স্ক্রিপ্ট, স্কার্ফ, স্টোল, চাদর। কদিন আগে অ্যাশট্রে উলটে একগাদা ছাই পড়েছিল বিছানায়। একটা বাতিল নোটবুক দিয়ে সেটা বিছানাতেই চাপা দেওয়া। অন্ধকার ঘরে এইসব লণ্ডভণ্ডের মাঝে ভর সন্ধেয় ট্যাবে বেজে চলেছে আহির ভৈরবের আলাপ। খালি গলায়। নারী কন্ঠ। সারা ঘরে তরলের মতো, সুগন্ধির মতো ছড়িয়ে পড়ছে সেই আলাপ। যেন এ পৃথিবীতে এ ঘরে এলোমেলো কিচ্ছুটি নেই। ঋষভ আর নিষাদ কোমল করে আহির ভৈরবের মতো সত্য যেন আর কিছুই নেই। এটা যাকে দিইয়ে রেকর্ড করিয়েছিলাম, তার নাম তার মুখ মনে নেই। সে এখন কোথায়, কে জানে। তবু সুর সত্য। তাতেই অনন্ত জাগে, একলা ঘরে, ডাবল বেডে, একা অনন্ত জাগে। জেগে বসে থাকে।
৫
অনেকদিন পর থিয়েটারে ফিরছি। আমার নতুন নাটকের বিষয় : কাশ্মীর। একক অভিনয়ের নাটক। বেশ কিছু মাস ধরে এই উপত্যকাটি আমাদের সংবাদমাধ্যমগগুলোয় রোজ উপস্থিত থাকত। খবরের কাগজে যখন চাকরি করতাম, দেশ-বিদেশের পাতা করতে গিয়ে দেখতাম বরাদ্দ দু পাতায় ৭০ শতাংশ খবরের শিরোনামেই ‘কাশ্মীর’ শব্দটি রয়েছে। এটা ততদিন চলেছে যতদিন না এনআরসি, এনপিআর, সিএএ এসে কাশ্মীর বিষয়কে ম্রিয়মান করে দিয়েছে। সংবাদমাধ্যম এইভাবে নানা বিষয়কে পেছনে ছেড়ে আসতে থাকে। শিল্পীকে একটু পিছিয়ে গিয়ে কুড়িয়ে নিতে হয়। কাশ্মীর নিয়ে আমরা যা শুনেছি সবই মূলত ভারত বা পাকিস্তানের কথা। আমার এ নাটকে কথা বলবেন এক কাশ্মীরি সাংবাদিক। তাঁর চোখে ভারত, তাঁর চোখে পাকিস্তান, তাঁর চোখে কাশ্মীর, এ নিয়েই প্রেস মিট করবেন তিনি। নাটকের আবহ সঙ্গীত নির্মাণ করতে গিয়ে বেছে নিয়েছি আগা শহিদ আলির কবিতা ও আহির ভৈরব রাগটিকে। আহির ভৈরব কেন? আহির ভৈরবের চলন অনেকটা ভৈরবের মতো বলে একে ভোরে গাওয়া হয়। কিন্তু উত্তর ভারতীয় মার্গ সংগীতের ১০টি ঠাটের একটিতেও একে ফেলা যায় না। ভৈরব হয়েও এ তাই ভৈরব নয়। ঠিক যেন কাশ্মীর। ভারতের হয়েও ভারতের নয়। কিছুটা পাকিস্তানের হয়েও পাকিস্তানের নয়। স্বতন্ত্র হয়েই সে এক ভোরকে দেখতে চায়। ভূস্বর্গের ভোর।
৬
পুবের দু’ জানলা দিয়ে সকালের রোদ এসে পড়েছে বিছানায়। জানলার গ্রিলের ছায়ার ফাঁকে ফাঁকে সে রোদ বুকের আঁচল খুলে শুয়ে আছে। আর তাতে লুটোপুটি খাচ্ছে আহির ভৈরব। কাল মাঝরাত থেকে নতুন নাটকের আবহ সঙ্গীত তৈরিতে বসেছি। কিন্তু করতে গিয়ে খেয়াল হয় আমার কাছে তো এখানে রেকর্ডিং ইকুইপমেন্ট কিছুই নেই। ডেস্কটপ হাতড়ে অনেক পুরনো এক নাটকের কিছু মিউজিক অ্যারেঞ্জমেন্ট পেলাম। আমারই করা। তাতে আহির ভৈরবের একটা কম্পোজিশন দেখলাম চমৎকার মিলে যাচ্ছে আমার নতুন নাটকের জায়গায়। ট্যাবে রাতেই চালিয়ে দিলাম সেটা। সারারাত বাজল আহির ভৈরব। এখন, সকালেও বেজে যাচ্ছে। আমি তো সঙ্গীত শিখেছি থিয়েটার করতে গিয়ে। আরও অনেক কিছুই থিয়েটার করতে গিয়েই শেখা। ফলে কিছু শেখার জন্য শেখা, আমার সেভাবে হয়ে ওঠেনি। এটা বলতে বলতেই মনে এল, নমাজ পড়তেও শিখেছি এই নাটক করতে গিয়েই। আমার বেহালার গুরুজি ব্রজনাথ মাহাতো বলতেন, “রাগ বাজাতে গিয়ে কখনও সময়ের সুবিধে নেবে না। প্রথম প্রথম বুঝতাম না কথাটার মানে। পরে বুঝলাম, আসলে তিনি বলতেন, দ্যাখো ইমন হল সন্ধের, গোধূলি লগ্নের রাগ। তুমি যদি গোধূলিতেই ইমন ধরো, তাতে সন্ধ্যার ভাব শ্রোতার কানে এমনিই আসবে। কারণ তখন তো গোধূলি। তুমি তোমার রাগ দিয়ে গোধূলি বানালে না। যদি ভোরে ইমন বাজিয়ে শ্রোতার মনে সন্ধ্যার ভাব আনতে পারো, তবেই সার্থক তোমার বাজনা।” তাই কখনও সময়ের সুবিধে নিও না। আমি কাল মাঝরাত থেকে যখন আহির ভৈরবের কম্পোজিশনটা ট্যাবে বাজাতে শুরু করলাম, তখন দরবারির সময়। কিন্তু ভৈরব, আহিরি আর কাফি ছুঁয়ে বাজতে শুরু করল আহির ভৈরব। সময়ের সুবিধে নিও না। সময়টাকে তৈরি করো। এটাই ভারতীয় ধ্রুপদী বা মার্গ সঙ্গীতের শিক্ষা।
অর্জুন বন্দ্যোপাধ্যাযের জন্ম ১৯৮৫-তে। বর্তমানে শিলিগুড়ির বাসিন্দা। একদা সাংবাদিকতার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। বঙ্কিমচন্দ্র ও মরণ অন্তরালে নামে দুটি উপন্যাস ও ডি মেজর নামে গল্পসংকলন প্রকাশিত হয়েছে। ধ্রুপদী সঙ্গীত ও নাটক নিয়মিত চর্চায় রাখেন। ভালোবাসেন বাজার আর রান্না করতে।