শবরীমালার মন্দিরে ঋতুযোগ্য মেয়েদের ঢুকতে আইনি কোনও বাধা নেই। অন্তত সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ সে রকম বলেই মনে করা হয়েছিল। কিন্তু এখন নতুন প্রশ্ন দেখা দিযেছে। কেরল সরকারের আইনি উপদেষ্টা জানিয়েছেন, সুপ্রিম কোর্ট ঠিক কোন পথে চলতে বলেছেন, সেটা পরিষ্কার নয়, তাই তাঁরা আপাতত সাবধানে পা ফেলছেন। সাবধান মানে দশ থেকে পঞ্চাশ বছরের মেয়েদের মন্দিরে প্রবেশ করতে না দেওয়া। যাঁরা যেতে চেয়েছেন, তাঁদের মন্দির থেকে দূরেই আটকে দেওয়া হয়েছে। আটকে দিয়েছে প্রশাসনের লোকেরাই।
আইন আদালতের রহস্য আপাতত রহস্যই থাকুক। কিন্তু এ দেশে দেখা গেছে বার বার, আইনের যেখানে শেষ হয, রাজনীতির সেখানে শুরু। কেরলের যে বামপন্থী সরকার আগের বারে মেয়েদের প্রবেশাধিকার রক্ষা করতে বদ্ধপরিকর ছিলেন, এখন তাঁরাই বেসুর গাইতে তৎপর। কারণটা অনুমান করতে অসুবিধা নেই। আইন যা-ই বলুক, সংবিধানে যে মৌলিক অধিকারই দেওয়া থাকুক, ভোটের রাজনীতি বড় বালাই। সেই রাজনীতি দাবি করে, এমন পথে চলো যাতে বহু মানুষ অসন্তুষ্ট না হয়। এবং ভারত এমন একটা দেশ, যেখানে ক্রমশই তথাকথিত ঐতিহ্যের মোহ আর তার পরম্পরায় বিশ্বাসের জোর বেড়েই চলেছে। শবরীমালার মন্দিরে ঋতুযোগ্য মেয়েদের ঢোকা বারণ, এই ধারণা ঠিক কবে থেকে কীভাবে কতটা জোরদার হয়েছে এবং কতটা কার্যকর হয়েছে, তা নিয়ে বিস্তর সংশয় আছে। অনেকেই বলেন, আগে এই নিয়ে এত বাড়াবাড়ি ছিল না, যে যেমন বিশ্বাস করতেন সেই অনুসারে চলতেন।
কিন্তু এখন বিশ্বাস আর নিছক বিশ্বাস নেই, তা হয়ে উঠেছে রাজনীতির উপকরণ। সেই রাজনীতিতে যুক্তি বা সাংবিধানিক আদর্শের চেয়ে আবেগের দাম অনেক বেশি। সেই আবেগে যদি বহু মানুষকে একসঙ্গে উদ্বুদ্ধ বা উত্তেজিত করে তোলা যায় তা হলে সরকারি এবং বিরোধী, দুই তরফের রাজনীতিকরাই তার সামনে সহজে নতিস্বীকার করেন। তার বহু লক্ষণ এবং বহু প্রমাণ চারপাশে চোখের সামনে জ্বলজ্বল করছে। দুর্ভাগ্যের কথা, আইন-আদালতের অঙ্গনেও সময়েই এমন সিদ্ধান্ত করা হচ্ছে, যা ওই বিশ্বাসকেই যুক্তির ওপরে স্থান দেয়। এ জন্য আদালতকে দোষ দেওয়ার প্রশ্ন ওঠে না, আদালতের নির্দেশ শিরোধার্য, সে কথাও একেবারে অনস্বীকার্য।
কিন্তু সমাজ? সমাজ কেন এই অপরীক্ষিত আবেগের দাসত্ব করে চলবে? কেন বলবে না, পুরনো প্রথা মানেই তা শিরোধার্য নয়? বিশেষ করে কেরলের মতো রাজ্যে, যেখানে শিক্ষার হার, বিশেষত স্ত্রীশিক্ষার হার অত্যন্ত সন্তোষজনক? এর কোনও সহজ উত্তর নেই। অতএব, আপাতত সবার উপরে আবেগ সত্য।

সঞ্চারী মুখোপাধ্যায় হাসিখুশি, এমনকী যখন সেই মোড-এ থাকেন না, নিজেকে ঠেলে হিঁচড়ে হিহিহোহো’তেই ল্যান্ড করানোর চেষ্টা করেন। জাপটে ভালবাসেন আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব, সিরিয়াল, গান, রাস্তায় নেড়িবাচ্চার লটরপটর কান। পড়াশোনার সময় ফিল্ড করেছেন, হাতুড়ি দিয়ে পাথর ভেঙেছেন, গ্রামবাসীদের তাড়া খেয়েছেন, এক বার পাহাড় থেকে অনেকটা হড়কে পড়ে মুচ্ছো গেছিলেন, উঠে দেখেন, কবর! এক বার ম্যানেজমেন্ট কোর্সের অঙ্গ হিসেবে চিন গেছিলেন, রাত্তির দুটোয় সাংহাইয়ের রাস্তায় হারিয়ে গিয়েও কাঁদেননি। ফিউজ সারাতে পারেন, পাখার কার্বন বদলাতে পারেন, কাগজের চোঙ পাকিয়ে গাড়িতে পেট্রল ঢালতে পারেন, চিনেবাদাম ছুড়ে দিয়ে মুখে নিপুণ লুফতে পারেন। ব্যাডমিন্টন খেলার ইচ্ছে খুব, কিন্তু জায়গা ও র‌্যাকেট নেই। অরোরা বোরিয়ালিস যারা দেখেছে, তাদের একাগ্র ভাবে হিংসে করেন। দেশের বাড়িটা উনি বড় হওয়ার পর ছোট হয়ে গেছে বলে, আর আমির খান এক বার কার্টুন এঁকে দিয়েছিলেন— সে কাগজ হারিয়ে গেছে বলে, জেনুইন কষ্ট পান। এক বার ঈগলের রাজকীয় উড়ান আগাগোড়া খুব কাছ থেকে দেখেছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *