ছোটবেলা থেকেই বাচ্চাকে ঘরের কাজ শেখাও, স্বনির্ভর করে তোলো – মা কাকিমা ঠাকুমার এই উপদেশ শোনেননি, এমন মা খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। কিন্তু কেন এমন বলা হয় যুগের পর যুগ ধরে? সত্যিই কি এর কোনও মনস্তাত্ত্বিক ভিত্তি আছে?  

মনোবিদদের দাবি, আগেকার গবেষণায় এমনটা মনে করা হত যে, কোনও শিশু যদি খুব ছোটবেলা থেকে গেরস্থালীর পাঠ নেয়, তার আত্মসংযম-ও বেশি হয়। তার বিবেক কার্যকর হয় বেশি। এই আত্মসংযম খুবই প্রয়োজনীয় এক চরিত্র-বৈশিষ্ট্য, যার মাধ্যমে মানুষ তার অস্বাভাবিক প্রবৃত্তিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে, দ্রুত মনঃসংযোগ করতে পারে, এমনকী কোনও কাজ করতে ইচ্ছে না হলেও তা দাঁত চেপে করে ফেলতে পারে। আর ঘরের কাজ করতে শিখলে এই আত্মসংযমের অভ্যাস নিজে থেকেই শিশুদের মধ্যে চলে আসে বলে মনে করতেন মনস্তাত্ত্বিকেরা। সেই বিশ্বাসই সাধারণ মানুষের মধ্যে চারিয়ে গিয়েছিল সু-অভ্যাসের পাঠ হিসেবে। 

কিন্তু নতুন যুগের গবেষণায় এই দাবিকে একেবারে নস্যাৎ করে দেওয়া হচ্ছে। হিউস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের মনস্তত্ত্বের অধ্যাপক রডিকা ড্যামিয়েন সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, “ছোটবেলা থেকে ঘরের কাজ করতে শেখার সঙ্গে আত্মসংযমের বিন্দুমাত্র কোনও সম্পর্ক নেই।“ তিনি আরও জানান, ক্যালিফর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে এই সংক্রান্ত গবেষণা চলছে গত দশ বছর ধরে। মেক্সিকান বংশোদ্ভুত বেশ কিছু পরিবারের শিশু-কিশোর এবং তাদের বাবা-মায়েদের উপর এই মর্মে পরীক্ষা করা হয়েছে। বাচ্চাদের বয়স দশ থেকে ষোলো বছরের মধ্যে। কিন্তু অল্পবয়সে গৃহকর্মের শিক্ষা পাওয়া বাচ্চাদের মধ্যে আত্মসংযমের বোধ প্রবল থাকে, এমন কোনও ইঙ্গিতই পায়নি ড্যামিয়েনের নেতৃত্বাধীন গবেষক দল। ড্যামিয়েনের কথায়, “যুগ যুগান্তর ধরে সাধারণ মানুষের মধ্যে এই ধারণা একেবারে প্রোথিত হয়ে গিয়েছিল। সম্ভবত আগেকার কোনও গবেষণা থেকেই এমনটা হয়ে থাকবে। তাই এবার যখন আমরা একেবারে নেতিবাচক প্রমাণ পেলাম, কিছুটা অবাক তো হয়েইছি।“ 

মানুষের আত্মসংযমের উৎপত্তি ঠিক কোথায়, এ সংক্রান্ত গবেষণা এখনও চলেছে পুরোদমে। কিন্তু ঘরকন্নার কাজ শেখার সঙ্গে যে তার একফোঁটাও যোগ নেই, এ কথাও প্রমাণিত হচ্ছে বারে বারেই। তবে এই ক্ষেত্রে গবেষকরা আরেকটি দিকে আলোকপাত করেছেন। তা হল, যেসব শিশুদের আত্মসংযমের বোধ বেশ ভালো, দশ থেকে ষোলোতে উত্তীর্ণ হতে হতে যারা আত্মসংযমের বিষয়টি সার্থক ভাবে আত্মস্থ করতে পারে, ভবিষ্যতে কর্মক্ষেত্রে তারা অনেক বেশি সাফল্য লাভ করে। ড্যামিয়েনের কথায়, “যেসব শিশুদের আত্মসংযমের বোধ খুব জোরালো, তারা বর্তমান যুগের কাজের স্ট্রেস, জব স্যাটিসফ্যাকশন, নিজের কাজের ওপর দখল, এই সবকটি ক্ষেত্রেই অনেক বেশি সাফল্য দেখাতে পারে। তবে শুধু শিশুকালে আত্মসংযম অভ্যাস করলেই যে এমন হবে তা নয়। দশ থেকে ষোলো এমনকি তার পরেও এই অভ্যাস করতে পারলে জীবনের পথ চলা অনেক সহজ হয়ে যাবে।“  

লিখতে শিখেই লুক থ্রু! লিখতে লিখতেই বড় হওয়া। লিখতে লিখতেই বুড়ো। গান ভালবেসে গান আর ত্বকের যত্ন মোটে নিতে পারেন না। আলুভাতে আর ডেভিলড ক্র্যাব বাঁচার রসদ। বাংলা বই, বাংলা গান আর মিঠাপাত্তি পান ছাড়া জীবন আলুনিসম বোধ হয়। ঝর্ণাকলম, ফ্রিজ ম্যাগনেট আর বেডস্যুইচ – এ তিনের লোভ ভয়ঙ্কর!!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *