সাংবাদিকরা আবার মানুষ নাকি? ওরা কী জানে, যা মন চায় প্রাণে চায়, টেবিলে বসে বসে লিখে দেয়।এ কথা আম জনতা বিশ্বাস করে, মানে, মানতে চায় এবং ঘোর বিশ্বাসও করে।  

ঠিক এ রকম বাছা বাছা বিশেষণই সাংবাদিকদের কপালে জোটে। অথচ সাংবাদিকরা য়খন প্রশ্ন করেন কিংবা নিজেদের প্রাণের তোয়াক্কা না করে খবর আনতে ছোটেন, উপদ্রুত অঞ্চলে প্রাণ হারান, তখন খুব বিশেষ যে তাঁদের নিয়ে হল্লা হয়, তা কিন্তু নয়। আর কে না জানে সাংবাদিকরা যখন রাষ্ট্রকে প্রশ্ন করে বসেন, তখন তাঁদের কারও কারও গৌরী লঙ্কেশের পরিণতি হয়। সাংবাদিক মিড-ডে মিলের খবর করলে হাজতে যান। সরকারের বিরুদ্ধে কথা বললে আর্বান নকশাল বলে হেফাজতে নেওয়া হয় আর পরিচয়ের প্রমাণ পত্র মনোমতো না হলে নাগরিকত্ব লোপ পায়। সুতরাং বাকস্বাধীনতা যে বিপন্ন, তা এ সব ঘটনা থেকেই বেশ স্পষ্ট। বাকস্বাধীনতা হরণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, বিক্ষোভও চলছে চলবে, তবে অস্ট্রেলিয়ার প্রথম সারির দৈনিকগুলি যে কাণ্ডটি সম্প্রতি করেছে, তা করতে গেলে নিশ্চয়ই ধক লাগে। তারা প্রথম পাতার প্রতিটি লাইন কালো কালি দিয়ে কেটে দিয়ে লিখেছে, “ নট ফর রিলিজ়”। উপরে সরকারি সিলমোহরের ছাপ, যদিও সেটা নকল। আর পাতার তলায় লেখা, ‘‘সরকার যখন সত্যিটা আপনার থেকে সরিয়ে রাখে, তারা কী গোপন করতে চায়?” কিছু দিন আগে সরকার বিরোধী খবর করে দু’টি সংবাদ সংস্থা। তার পরেই একটি চ্যানেলের দফতরে হানা দেয় পুলিশ। এক সাংবাদিকের বাড়িতেও তল্লাশি চালায় তারা। বিক্ষোভের শুরু সেই থেকেই। ‘তথ্য জানার অধিকার’ নিয়ে এই বিক্ষোভে শামিল হয়েছে টিভি চ্যানেলগুলোও। খবরের মাঝে মাঝে দর্শকদের জন্য পর্দায় ভেসে উঠেছে এই প্রশ্ন— ‘‘হোয়েন দ্য গভর্নমেন্ট হাইডস দ্য ট্রুথ ফ্রম ইউ, হোয়াট আর দে কভারিং আপ?’’  অস্ট্রেলিয়ার সাংবাদিকদের অনেকগুলি দাবির মধ্যে একটি দাবি হল জাতীয় নিরাপত্তা আইন থেকে সাংবাদিকদের অব্যাহতি। এবং এই দাবিটা নিয়েই বেশ গোল বেধেছে। কারণ সাংবাদিকদের বক্তব্য, এই আইনের জন্য বহু ক্ষেত্রে তাঁরা স্রেফ ‘ফেঁসে’ যান। 

কিন্তু একটা ব্যাপার মানতেই হবে। আমরা যে কেবল ভারত বা দক্ষিণ এশিয়ার উন্নয়নশীল দেশগুলিতে বাকস্বাধীনতা হরণ নিয়ে হতাশ হয়েছি তা নয়। পাশ্চাত্যের উন্নত দেশ, যেখানে বাকস্বাধীনতার জয়জয়কার চলছে বলে আমাদের ধারণা, সেখানেও কিন্তু সরকার বিরোধী মত প্রকাশ করলেই ঝামেলা। এবং সরকারকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলেই উত্তর আসছে, রাষ্ট্রের নিরাপত্তার খাতিরে এই পদক্ষেপ।

অথচ কী ধরনের নিরাপত্তার কথা সরকার ভাবছে, তা নিয়ে প্রশ্ন করাও কিন্তু নিষিদ্ধ। তথ্য জানার অধিকার নিয়ে আইন আছে বটে, কিন্তু তা ফলাতে গেলেই বিপদ গুরুতর। গোটা পৃথিবী জুড়েই আজ যে প্রশ্ন করার সংস্কৃতিকে দমিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলেছে, তা ভেবে আমাদের সকলেরই উদ্বিগ্ন হওয়া উচিত। কারণ এখন কোপটা পড়ছে সংবাদমাধ্যমের উপর, বাছাই ‘বুদ্ধিজীবী’দের উপর, পরের টার্গেট অবশ্যই সাধারণ মানুষ।

সঞ্চারী মুখোপাধ্যায় হাসিখুশি, এমনকী যখন সেই মোড-এ থাকেন না, নিজেকে ঠেলে হিঁচড়ে হিহিহোহো’তেই ল্যান্ড করানোর চেষ্টা করেন। জাপটে ভালবাসেন আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব, সিরিয়াল, গান, রাস্তায় নেড়িবাচ্চার লটরপটর কান। পড়াশোনার সময় ফিল্ড করেছেন, হাতুড়ি দিয়ে পাথর ভেঙেছেন, গ্রামবাসীদের তাড়া খেয়েছেন, এক বার পাহাড় থেকে অনেকটা হড়কে পড়ে মুচ্ছো গেছিলেন, উঠে দেখেন, কবর! এক বার ম্যানেজমেন্ট কোর্সের অঙ্গ হিসেবে চিন গেছিলেন, রাত্তির দুটোয় সাংহাইয়ের রাস্তায় হারিয়ে গিয়েও কাঁদেননি। ফিউজ সারাতে পারেন, পাখার কার্বন বদলাতে পারেন, কাগজের চোঙ পাকিয়ে গাড়িতে পেট্রল ঢালতে পারেন, চিনেবাদাম ছুড়ে দিয়ে মুখে নিপুণ লুফতে পারেন। ব্যাডমিন্টন খেলার ইচ্ছে খুব, কিন্তু জায়গা ও র‌্যাকেট নেই। অরোরা বোরিয়ালিস যারা দেখেছে, তাদের একাগ্র ভাবে হিংসে করেন। দেশের বাড়িটা উনি বড় হওয়ার পর ছোট হয়ে গেছে বলে, আর আমির খান এক বার কার্টুন এঁকে দিয়েছিলেন— সে কাগজ হারিয়ে গেছে বলে, জেনুইন কষ্ট পান। এক বার ঈগলের রাজকীয় উড়ান আগাগোড়া খুব কাছ থেকে দেখেছিলেন।

One Response

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *