রোদজলের কবিতা

ক্রমাগত বৃষ্টির দিনে আমাদের দেখা হবে

আদিম পৃথিবীর ছিটে, কাদা, তাকে গ্রহণ করো

ছিটোফোঁটা বলতে কী বোঝো তুমি?

দু’টি গাছের পায়ের দূরত্ব

গাছের মাথা মেনে চলে না, কোনওকালেই

তাহলে আমরা মেনে চলি কেন?

মাঠ ফেরত

প্যান্টের গোটানো অংশ

খুলে ফেলতে ফেলতে

কত নুড়ি, বালি

আমাদের ছোট্ট বাড়ির মালমশলা জমা হচ্ছে

ভ্রণের মতো, অজান্তে ঘুমোতে দেখি তাকে

যা বলে হাওয়া, তা আর মোরগের মতো ঘুরে ঘুরে শুনতে চাই না। বড় উস্তমপুস্তম চারপাশে। জানলার ধার, তোমাকে প্রতিনমস্কার। নিদ্রিত বন, হঠাৎ পাখির ভিতর থেকে উঠে ঝাঁপ দিল আকাশে, অনেক বৃষ্টির মধ্যে। নতুন ছাতা আমি পালটে নিতে চাই জনদরদি ব্যাঙের সঙ্গে। ট্রাম, তোমার পিছনে ছিপ। তুমি মাছ ধরতে ধরতে জলরাস্তা দিয়ে চলেছ। পার্ক স্ট্রিট ময়দানের পাঁচিলে ঘুমের প্রদর্শনী চলছে আজ। সারাদুপুর চলবে। পারলে দেখে এসো।

বৃষ্টিও আজ, সারাদুপুর, উর্ধ্বগামী।

এ বাস যেখানে থামে, তা তোমার বাড়ির কাছে জেনে

সকল যাত্রীকে মনে হয় আত্মীয়স্বজন

সিট ছেড়ে দিই, এমনকী, রোদ এলে তাকেও

জানলার পাশের সিটে খাতির করি

এগিয়ে দিই জল, টিকিট কেটে দেব ভাবি

কিন্তু রোদের টিকিট হয় না

কন্ডাক্টর বড় ভাল মানুষ

এই রোদ তোমার উপরও একটু পরে পড়বে,

ভেবে মাঝে মাঝে রোদে, অসহায়ভাবে

আমার হাত, বলিরেখা চলাচল করে

এমনও তো হতে পারে,

আমাকে ছোঁয়া অবস্থাতেই

রোদ তোমাকে ছুঁল

এই আমাদের সূর্যাবস্থা

বৃষ্টির পতঙ্গ ওড়ে চারিদিকে

এখন এমন মন

জ্বর জানে: বালকবর্ষ আলোকবর্ষ দূরে

এ মেঘ, সে মেঘ নয়, স্থির

শুষ্ক আপেল দিল মানব-সংকেত

এইমাত্র, বালক জ্বরের জ্ঞানে

বাতাসে উড়িয়ে দিল ক্ষুধাজিভ


পেশায় সাংবাদিক। গদ্যকার ও কবি হিসেবে পরিচিত। প্রথম বই 'গদ্যলেন'। লেখালেখির পাশাপাশি একাধিক বইয়ের অলঙ্করণের কাজেও ব্যস্ত থাকেন।

2 Responses

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *