বিচারপতিরাও চিন্তিত। ইন্টারনেট এবং সোশ্যাল মিডিয়ার অপব্যবহার নিয়ে সাধারণ মানুষের উদ্বেগ তো ক্রমশ বেড়েই চলেছে, এবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরাও তা নিয়ে গভীর দুশ্চিন্তার কথা জানালেন। সর্বোচ্চ আদালত কেন্দ্রীয় সরকারকে এ বিষয়ে একটি নির্দেশিকা তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন, বলেছেন তারা যেন তিন সপ্তাহের মধ্যে সেই নির্দেশিকা তৈরির ব্যাপারে একটি স্টেটাস রিপোর্ট দাখিল করে।

সোশ্যাল মিডিয়া সংক্রান্ত একটি মামলার বিচার প্রক্রিয়ার সূত্রেই বিচারপতিদের এই নির্দেশ। এই মামলাটি উপলক্ষেই তাঁরা কিছু মন্তব্য করেছেন, যা সাধারণ নাগরিকদের পক্ষেও খুবই প্রাসঙ্গিক। যেমন বিচারপতি দীপঙ্কর গুপ্তের মন্তব্য— ইন্টারনেটে চটপট একে ফর্টি সেভেন বন্দুক কিনে নেওয়াও এখন সহজ হয়ে গেছে! এক দিকে দেশের নিরাপত্তা, অন্য দিকে ব্যক্তিগত পরিসরের পবিত্রতা, দু’দিক বিচার করেই আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি, সোশ্যাল মিডিয়া ইত্যাদি ব্যবহারের ওপর একটা নিয়ন্ত্রণ আনার কথা ভাবা দরকার।

ব্যক্তিগত পরিসরের গুরুত্বের প্রশ্নটি কিছুদিন ধরেই খুব বড় আকারে দেখা দিয়েছে আধার কার্ড প্রচলনের সূত্রে। বিভিন্ন পরিষেবা ও নথির সঙ্গে আধার কার্ডকে যুক্ত করে দেওয়ার যে চেষ্টা চলছে, তাতে মানুষের ব্যক্তিগত গোপনীয়তার অধিকার লঙ্ঘিত হবে— এই অভিযোগ অনেকেরই। এ ক্ষেত্রে বিশেষ করে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে মোবাইল ফোনের সঙ্গে আধার সংযুক্ত করার ব্যাপারটি, কারণ তার মারফত অনেক ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

এই প্রসঙ্গেই স্মার্টফোন ব্যবহার করা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন বিচারপতিরা, এবং তাতে সায় দিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বলেছেন, তাঁর চারপাশে কয়েকজন এখন স্মার্টফোন ছেড়ে দিয়ে ফিচার ফোন ব্যবহার করা শুরু করেছেন, সেটাই বোধহয় ভাল।

কী ভাবে প্রযুক্তিঘটিত সমস্যা মেটানো যাবে, বিচারপতিরা স্বাভাবিকভাবেই তা নিয়ে চিন্তা করার দায়িত্ব দিয়েছেন সরকারকে, তাঁদের সঙ্গত প্রশ্ন— এটা কি আদালতের কাজ? বিচারপতি গুপ্তের প্রশ্ন— আমরা কেন ইন্টারনেট নিয়ে চিন্তা করব? আমাদের কাজ দেশ নিয়ে চিন্তাভাবনা করা। ঠিক কথা।

স্বতন্ত্র‚ চমকপ্রদ ও মন ভালো করা খবর পেশ করার চেষ্টা করি আমরা | প্রতিবেদন বিষয়ে আপনাদের মতামত জানান 'কমেন্ট' বক্সে | আপডেট পেতে ফলো করুন https://www.facebook.com/banglaliveofficial/

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *