মোবাইল ফোন ছাড়া আমাদের মোটে চলে না। সারা পৃথিবীর সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করার এর চেয়ে সহজ উপায় যে আর নেই! ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, ইমেল-এর পাসওয়র্ড থেকে শুরু করে জরুরি নম্বর, ক্রেডিট কার্ড ডিটেল সব থাকে আমাদের ফোনে। ফলে বলতে পারেন ফোন এখন আমাদের প্রাণ ভোমরা। সেই মোবাইল ফোন কোনওভাবে হারিয়ে গেলে একেবারে অথৈ জলে পড়ি আমরা। কিন্তু আর না। এই সমস্য়ার সমাধান করে ফেলেছে ডিপার্টমেন্ট অব টেলিকমিউনিকেশন (ডিওটি)। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী রবি শংকর সম্প্রতি মুম্বইতে একটি পোর্টাল লঞ্চ করেছেন যা মোবাল ফোন ব্যবহারকারীদের চুরি যাওয়া বা হারিয়ে যাওয়া মোবাইল খুঁজে পেতে সাহায্য করবে। ‘সেন্ট্রাল ইক্যুইপমেন্ট আইডেনটিট রেজিস্টার’ (সিইআইআর) নামক একটি প্রজেক্টের উপর কাজ করছে ডিওটি। এর ফলে যখনই কেউ ফোন চুরি বা হারিয়ে যাওয়া রিপোর্ট করবে, সঙ্গে সঙ্গে সেই ফোনটি ব্লক করে দেওয়া হবে। সেটি আর ব্যবহারযোগ্য থাকবে না। এতে চুরির সম্ভাবনা কমবে বলেই মনে করছে ডিওটি। পাশাপাশি এই ফোনগুলিকে ট্রেস করার ব্যবস্থাও থাকবে পোর্টালে। ডিওটি এর সঙ্গে মেরিটাইম কমিউনিকেশন সার্ভিসও লঞ্চ করছে। ভিএসএটি সলিউশন প্রদানকারী নেলকো মেরিটাইম সেক্টরে ব্রডব্য়ান্ড সার্ভিস জোগাবে।

প্রতিটা মোবাইল ফোনের একটি অভিনব ইন্টারন্যাশনাল মোবাইল ইক্যুইপমেন্ট আইডেনটিটি (IMEI) নম্বর থাকে। এই নম্বর দিয়ে মোবাইল ফোন সনাক্ত করা হয়। কিন্তু এই নম্বর রিপ্রোগ্র্যাম করা যায়, ফলে কিছু মানুষ তার ফায়দা তোলে এবং আইএমইআই-এর ক্লোনিং করে, একসঙ্গে অনেকগুলো ফোনে একই নম্বর ফিট করে দেয়। ক্লোনড আইএমইআই হ্যান্ডসেটের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় আসল ফোন সনাক্ত করা মুশকিল হয়ে যায়। এবার এই সব আইএমইআইগুলো যদি ব্লক করে দেওয়া হয়, তা হলে আসল মালিকদের অসুবিধে হতে পারে। তাই নকল আইএমইআই ফোনগুলো চিনে সেগুলো বাতিল করা প্রয়োজন। আর তাই এই প্রজেক্টের উপর কাজ করছে ডিওটি।

কীভাবে রিপোর্ট করবেন

মোবাইল ফোন হারিয়ে গেলে বা চুরি হলে, প্রথমে পুলিশে স্টেশনে গিয়ে একটা এফআইআর দায়ের করতে হবে। তারপর হেল্পলাইনের মাধ্যমে (১৪৪২২) ডিওট-কি জানাতে হবে। ভেরিফিকেশনের পর ডিওটি ফোনটিকে ব্ল্য়াকলিস্ট করে দেবে। ফলে ফোনটি আর ব্যবহারযোগ্য থাকবে না। কেউ যদি অন্য সিম ঢুকিয়ে ফোনটি চালু করার চেষ্টা করে, সার্ভিস প্রোভাইডারের কাছে সেই তথ্য চলে যাবে। কে এই ফোনটি ব্যবহার করার চেষ্টা করছে তারা বুঝতে পারবে এবং সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে জানিয়ে দেবে। মহারাষ্ট্রে আপাতত এই সার্ভিস শুরু করা হয়েছে। ট্রায়াল করা হচ্ছে, যদি সফল হয়, দেশের অন্য়ান্য রাজ্যগুলিতে চালু হয়ে যাবে এই পরিষেবা।

২০১৭ সাল থেকে ডিওটি সিইআইআর-এর উপর কাজ করছে। ২০১৭ সাল থেকে প্রতিটি আইএমআই নম্বর তারা সিস্টেমে সুরক্ষিত রেখেছে। জিএসএম অ্য়াসোশিয়েশনের কাছে যে সারা বিশ্বেস আইএমআই নম্বর আছে, তাও পেয়ে যাবে ডিওটি। ফলে সহজেই ভুল আইএমআই নম্বর তারা সনাক্ত করতে পারবে বলেই বিশ্বাস।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *