কয়েক দিনের বিরতির পর ফের রণক্ষেত্রে পরিণত হল হংকং। এ বার বিক্ষোভকারীদের উপর গুলি চালানোর অভিযোগ উঠল চীনপন্থী প্রশাসনের পুলিশের বিরুদ্ধে।

বন্দি প্রত্যর্পণ সংক্রান্ত আইনকে কেন্দ্র করে গত কয়েক মাস ধরে বিপুল গণবিক্ষোভে কার্যত উত্তাল হয়ে রয়েছে হংকং। প্রায় প্রতি দিনই পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হচ্ছে বিক্ষোভকারীদের। চলতি মাসের শুরুতে টানা কয়েকদিন বিমানবন্দরের দখল নিয়ে রেখেছিলেন আন্দোলনকারীরা। বিক্ষোভ সামলাতে শহরের বাইরে ট্যাঙ্ক মোতায়েন করেছিল চিন। বেজিং-এর প্রবল চাপের মুখে গত কয়েক দিন কিছুটা স্তিমিত ছিল আন্দোলন। কিন্তু রবিবার থেকে ফের বিপজ্জনক বাঁক নিয়েছে পরিস্থিতি।

রবিবার শহরের তিয়েন ওয়ানে সমবেত হন হাজার হাজার বিক্ষোভকারী। তাঁদের সামলাতে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ ছিল না বলে অভিযোগ। দীর্ঘক্ষণ বিক্ষোভ চলার পর পুলিশকর্মীদের সঙ্গে বচসা শুরু হয় বিক্ষোভকারীদের। দেখা যায় বাঁশ, লাঠি, পাথর, কাচের বোতল নিয়ে পুলিশের দিকে ধেয়ে যাচ্ছেন কয়েক হাজার আন্দোলনকারী। গোটা চত্ত্বর জুড়ে শুরু হয় জনতা-পুলিশ সংঘর্ষ। লাঠিচার্জ ও টিয়ার গ্যাস ছুড়তে শুরু করে পুলিশ। বাহিনীর দিকে পাল্টা উড়ে আসে বোতল, পাথর, জুতো। মাটি থেকে টিয়ার গ্যাসের শেল কুড়িয়েও পুলিশের দিকে ছুড়ে মারেন আন্দোলনকারীরা। এই পর্যায়ে বিক্ষোভরত জনতার দিকে বন্দুক তাক করেন ৩ পুলিশকর্মী। গুলি চলার শব্দও শোনা গিয়েছে বলে দাবি করেছে একাধিক সংবাদমাধ্যম। যদিও এখনও পর্যন্ত হতাহতের কোনও খবর মেলেনি।

হংকং-এর চীনপন্থী প্রশাসনের দাবি, আন্দোলনকারীদের আক্রমণে গুরুতর আহত হয়েছেন একাধিক পুলিশকর্মী। অন্তত ১৫ জন পুলিশকর্মীকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে শূন্যে গুলি চালানোর কথাও স্বীকার করেছে প্রশাসন। বিক্ষোভ সামলাতে অনেককে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে এক ১২ বছরের বালকও রয়েছে। প্রসঙ্গত, এত দিন পর্যন্ত আন্দোলন নিয়ন্ত্রণে লাঠি ও টিয়ার গ্যাস ব্যবহার করত পুলিশ। গত ১২ সপ্তাহের বিক্ষোভে এ দিনই প্রথম জলকামান ও গুলি ব্যবহার করা হয়।

প্রশাসনের অস্বস্তি বাড়িয়েে রবিবারই শহরের রাস্তায় মিছিল করেছেন পুলিশকর্মীদের পরিবারের কয়েক হাজার সদস্য। তাঁদের অভিযোগ, চীনপন্থী শাসক ক্যারি লাম পুলিশকর্মীদের ঝুঁকির মুখে ফেলছেন। আক্রমনাত্মক পদ্ধতিতে আন্দোলন দমন করতে গিয়ে লাম প্রশাসন কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদের জীবন বিপন্ন করছেন। এডিনবরা প্লেসের ওই বিক্ষোভ মিছিলে উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন পুলিশ আধিকারিকেরাও। তাঁরা বিক্ষোভ দমনে পুলিশের ভূমিকার নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *