আমি তোর্সা। আমার নামটা আসলে একটা নদীর নাম। কিন্তু আমার নদীর চেয়ে সমুদ্রই বেশি ভালো লাগে।

আমি একটা সমুদ্রের ধারের ছবি এঁকেছি। সি-বিচ। সেখানে সোনালি রঙের বালি আর তার সামনে নীল রঙের জল।

সব সময় অবশ্য জলটা নীল দেখায় না। ছাই ছাই রঙেরও দেখায়। সমুদ্রের ঢেউয়ের সঙ্গে ছুটে ছুটে খেলা করতে খুব মজা। আর বালি দিয়ে খেলতেও খুব মজা। বালি দিয়ে পাহাড়ও বানানো যায়, বাড়িও বানানো যায়। বালির মধ্যে ছোট ছোট গর্তে কাঁকড়ারা থাকে। ওদের দিকে গেলেই গর্তে লুকিয়ে পড়ে। ভিতু কাঁকড়া।

গরমকালে রোদ্দুরে বালি খুব গরম হয়ে যায়। এটা গরমকালের ছবি। তাই মেয়েটা ছাতার তলায় ছায়ায় চাদর পেতে বালিশে বসে আছে। আর ছেলেটা জলে-বালিতে বল দিয়ে খেলছে। আমারও বল খেলতে ভালো লাগে।

সমুদ্রে কত নৌকো আর জাহাজ দেখা যায় দূরে। আমিও দু’টো বড় নৌকো এঁকেছি। ওরা এখন কাছাকাছি আছে তাই বড় দেখাচ্ছে। একটু পরে অনেক দূরে চলে যাবে। তখন এইটুকু দেখাবে। তারপর ভ্যানিশ হয়ে যাবে। আর দেখা যাবে না।

আমার স্কুল এখন বন্ধ। লকডাউন। অন্য সময় স্কুল ছুটি থাকলে আমরা বেড়াতে যাই। সমুদ্রের ধারেও যাই। কিন্তু এবার সমুদ্রের ধারে যাওয়া হল না। মা-বাবা বলেছে গেলেই অসুখ করবে। তাই সমুদ্রের ছবি এঁকেছি।

 

*লেখকের বক্তব্যের ভিত্তিতে অনুলিখন করেছেন পল্লবী মজুমদার

ছ' বছরের রঞ্জাবতীর ডাকনাম তোর্সা। ফ্রিডম ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে ক্লাস ওয়ানের ছাত্রী। হাসিখুশি, ঝলমলে। নিজের দুনিয়ায় মগ্ন থাকা রঞ্জা ভালোবাসে পাখি-পিঁপড়েদের সঙ্গে গল্প করতে, নানারকম হাতের কাজ করতে, গুনগুন করতে আর ব‌ই পড়তে। তার অফুরন্ত প্রশ্নের ঠ্যালায় মা বাবার অবস্থা দেখার মতো।

One Response

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *